পেগাসাস স্পাইওয়্যার একটি ভয়ংকর হ্যাকিং সফটওয়্যার

0
44
পেগাসাস স্পাইওয়্যার একটি ভয়ংকর হ্যাকিং সফটওয়্যার
পেগাসাস স্পাইওয়্যার একটি ভয়ংকর হ্যাকিং সফটওয়্যার

এটি ইসরায়েলি সাইবার আর্মস সংস্থা (এনএসও) গ্রুপ দ্বারা নির্মিত একটি স্পাইওয়্যার যা গোপনে মোবাইল ফোনের আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডের  নিরাপত্তা সহজে ভেদ করতে পারে । পেগাসাস স্পাইওয়্যার একটি ভয়ংকর হ্যাকিং সফটওয়্যার। ২০১৬ সালের হিসাবে, পেগাসাস পাঠ্য বার্তা পড়ার, কলগুলি ট্র্যাক করতে, পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করতে, অবস্থানের ট্র্যাকিং করতে, টার্গেট ডিভাইসের মাইক্রোফোন এবং ক্যামেরা অ্যাক্সেস করতে এবং অ্যাপ্লিকেশন থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম ছিল।  স্পাইওয়্যারটির নামকরণ করা হয় পৌরাণিক ডানাযুক্ত ঘোড়া পেগাসাসের নামানুসারে। 

বিশেষজ্ঞরা জানান, শুধু আইফোন ব্যবহারকারীদের নয় পেগাসাস অ্যানড্রোয়েড ফোনও হ্যাক করতে পারে৷ ২০১৯ সালে এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করে ফেসবুক৷ তার পরই জানা যায়, পেগাসাস ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভারতের বহু সাংবাদিক ও সমাজকর্মীর ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে৷ 

এই নজরদারির সফটওয়্যার কী করে কাজ করে সে বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে।

গার্ডিয়ান লিখেছে, পেগাসাস যদি একবার আপনার ফোনে ঢোকার পথ করে নিতে পারে, তাহলে আপনার অগোচরে সে আপনার ফোনকে পরিণত করবে ২৪ ঘণ্টার এক নজরদারির যন্ত্রে। 

ফোনে যত মেসেজ আসুক বা পাঠানো হোক, পেগাসাস তা কপি করে পাঠিয়ে দিতে নির্দিষ্ট জায়গায়। ফোনে থাকা ছবির ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে।  

এই সফটওয়্যার ফোন কল রেকর্ড করতে পারে, এমনকি ফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে গোপনে আপনার ভিডিও ধারণ করতে পারে।

আপনি হয়ত হাতের কাছে ফোন রেখে কারও সাথে কথা বলছেন। পেগাসাস আপনার ফোনের মাইক্রোফোনকে জাগিয়ে তুলে আপনার অজান্তেই সেই আলাপ রেকর্ড করে ফেলতে পারে।

আপনি কোথায় আছেন, কিংবা কোথায় গিয়েছিলেন, কার সাথে দেখা করেছিলেন, সেসব বিষয়ও পেগাসাস চিহ্নিত করার ক্ষমতা রাখে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপ বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে পেগাসাস নামের এই ‘হ্যাকিং সফটওয়্যার’ বা ‘স্পাইওয়্যারটি’ বিক্রি করেছে। আইওএস বা অ্যান্ড্রয়েডে চলে এমন শত কোটি ফোনে নজরদারি চালানোর ক্ষমতা এই পেগাসাস সিস্টেমের রয়েছে। 

২০১৯ সালে হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, ওই ধরনের ত্রুটির সুযোগ নিয়ে এনএসওর সফটওয়্যার ১৪০০ ফোনে ম্যালওয়ার পাঠিয়েছিল। সেজন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তির ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে শুধু একটি কল করা হত। আর ওই কলের মধ্য দিয়েই পেগাসাসের কোড ফোনে ইনস্টল হয়ে যেত।

সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাপলের আইমেসেজ সফটওয়্যারের ত্রুটি ব্যবহার করে স্পাইওয়্যার পাঠানো শুরু করে এনএসও। অ্যাপল বলছে, এ ধরনের হ্যাকিং ঠেকাতে তারা সবসময় তাদের সফটওয়্যার আপডেট করে যাচ্ছে। 

সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, ফোনের নিরাপত্তা নিয়ে যিনি সবচেয়ে বেশি সচেতন, তিনিও এই স্পাইওয়্যারের আক্রমণ থেকে নিরাপদ নন।

ক্লডিও গুয়ারনিয়েরি বলেন, “যখনই আমরা কোনো ফোনের ফরেনসিক পরীক্ষা করি, প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই একটি প্রশ্ন আমাদের শুনতে হয়- কী করলে ভবিষ্যতে আবারও এরকম হ্যাকিং ঠেকানো যাবে। সত্যি কথা বলতে কি, এর কোনো উপায় নেই।”