
সম্প্রতি আমেরিকায় মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। পৃথিবীতে প্রথম ভয়ঙ্কর’ এই পদ্ধতিতে শাস্তি দেওয়া হল কাউকে। যা নিয়ে সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে হৈচৈ।
গত ২৫ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় এক ব্যাক্তির।
১৯৮৮ সালে এলিজাবেথ সেনেট নামে এক মহিলাকে খুন করেন কেনেথ স্মিথ। কেনেথ ছিলেন একজন ভাড়াটে খুনি। চার্লস সেনেট নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে খুন করার জন্য কেনেথকে ভাড়া করেছিলেন। বিনিময়ে তাকে দেয়া হয়েছিল এক হাজার ডলার।
এলিজাবেথকে খুন করার জন্য কেনেথ স্মিথের একজন সহযোগীও ছিলেন। তাঁকেও ম়ৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছিল আদালত। ২০১০ সালে তাঁর সাজা কার্যকর করা হয়েছিল। তবে কেনেথের বিচার চলছিল। নিম্ন আদালতের দেওয়া ম়ৃত্যুদণ্ড সাজা উচ্চ আদালত হয়ে সর্বোচ্চ আদালতেও বহাল থাকে।
কী ভাবে কেনেথের ম়ৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ২০২২ সালে এক বার কেনেথকে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে ম়ৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা স্থির হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত তা স্থগিত হয়ে যায়। পরে আমেরিকার অঙ্গরাজ্য আলাবামার গর্ভনর ফের কেনেথের ম়ৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ব্যাপারে উদ্যোগী হন।
শেষ পর্যন্ত ঠিক হয় নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি কার্যকর করা হবে কেনেথের। শেষমেশ তাই করা হয়। নাইট্রোজেন প্রয়োগে মৃত্যুদণ্ড।
কেনেথের মুখে একটি মাস্ক আটকে দেওয়া হয়। ঠিক যে ভাবে কোনও রোগীকে মাস্কের মাধ্যমে অক্সিজন দেওয়া হয়। শুধু অক্সিজেনের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছিলো ছিল নাইট্রোজেন। এতে ২২ মিনিটে কেনেথের ম়ৃত্যু নিশ্চিত হয়।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠক করে কেনেথের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন আলাবামা কারা বিভাগের কমিশনার জন হ্যাম। তিনি বলেন, “অনেক ক্ষণ পর্যন্ত শ্বাস ধরে রেখেছিলেন কেনেথ। শেষ পর্যন্ত বাঁচার লড়াই ছেড়ে দেন তিনি।’’
গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা আমারিকায় নতুন নয়। ১৯৯৯ সালে খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে হাইড্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মারা হয়।