নরসিংদীতে সিনেমা হল ভেঙে হচ্ছে মাদ্রাসা

0
7
নরসিংদীতে সিনেমা হল ভেঙে হচ্ছে মাদ্রাসা
নরসিংদীতে সিনেমা হল ভেঙে হচ্ছে মাদ্রাসা

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ এলাকায় ৮০’র দশকের জনপ্রিয় ‘ছন্দা’ সিনেমা হলটি ভেঙে প্রতিষ্ঠা করা হবে ইদরিসিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা নামে একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সিনেমা হলের জমিটি কেনার জন্য ২০ লাখ টাকা বায়না করা হয়েছে।

এলাকার রাস্তার পাশে বড় একটি ব্যানার টাঙ্গানো হয়েছে। ব্যানারে লেখা ‘আলহামদুলিল্লাহ ছন্দা সিনেমা হলটি মাদরাসার জন্য বায়না করা হয়েছে। চুক্তিমূল্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা, বায়নামূল্য ২০ লাখ টাকা। সদকায়ে জারিয়ার এ মহৎ কাজে আপনাদের আন্তরিক দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি। প্রচারে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা’।

স্থানীয়রা জানান, সিনেমা হলের সামনের রাস্তার পাশে ‘প্রচারে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিবৃন্দ’ নামে একটি ব্যানার সাঁটানো রয়েছে।

ইদরিসিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসার জিম্মাদার মাওলানা মোকাররম হোসেন বলেন, ‘জমির বায়না করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য বিত্তবানসহ সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্যও চাওয়া হচ্ছে। আশা করি, খুব দ্রুতই জমির নির্ধারিত মূল্যের বাকি টাকা পরিশোধ করে মাদ্রাসা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আনুসঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। দলিলসহ প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় হবে।’

নরসিংদীর প্রবীণ চলচ্চিত্র প্রযোজক শামসুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন শিল্প ক্রান্তিকাল পার করছে। ক্রমশ নিভে যাচ্ছে দেশের হলগুলোর রূপালী পর্দার আলো। নরসিংদীতে গত দুই দশকে বন্ধ হয়ে গেছে ১৫টির বেশি প্রেক্ষাগৃহ। সবশেষ হাসনাবাদের ৯০ দশকের ছন্দা সিনেমা হলটি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে নরসিংদীতে টিকে আছে দু-একটি সিনেমা হল। তাছাড়া বর্তমান ডিজিটাল যুগে সবার হাতে স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট থাকায় এখন সিনেমা, নাটকসহ চিত্তবিনোদন হাতের মুঠোয়। তাই এখন আর সিনেমা হলে যেতে হয় না। মানুষ মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ-ডেক্সটপেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিনেমা, নাটক ইত্যাদি দেখে থাকে।’

সিনেমা হলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমন খান জানান, বর্তমানে সিনেমা ব্যবসা মন্দা হওয়ায় তাদের অবস্থা শোচনীয়। মালিকপক্ষ ঠিকমতো বেতন দিতে পারে না। সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই অন্য পেশা বেছে নিচ্ছে।

ছন্দা সিনেমা হলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রুবেল আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন লোকসান গুনে হলটি চলছিল। মাস শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, জেনারেটরসহ নানা মেইনটেন্যান্স খরচ রয়েছে। লোকসানি এ প্রতিষ্ঠানটি আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

কয়েক বছর আগেও সপ্তাহে দু-একটি সিনেমা রিলিজ হতো, এখন মাসেও একটি হয় না। নতুন সিনেমা মুক্তি পেলে তা দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই ইন্টারনেটে বা অন্যান্য কোনো মাধ্যমে পাওয়া যায়। তাই হলে তেমন কেউ সিনেমা দেখতে আসে না। নিরুপায় হয়ে এ ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হচ্ছে।’