আয়াতকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

0
57
আয়াতকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা
আয়াতকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

৬ বছর বয়সী ছোট্ট শিশু আলিন ইসলাম আয়াত। সে নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার সোহেল রানার মেয়ে। আয়াত স্থানীয় একটি নুরানি মাদ্রাসার হেফজ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

তাদের বাসার পুরোনো ভাড়াটে আবীর আলী (২০) মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করেছিল। অপহরণের পর শিশুটি কান্না করতে থাকায় ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে তাকে হত্যা করে আবীর। বাবা সোহেল রানা থানায় নিখোঁজের ডায়েরিও করেন। শেষ পর্যন্ত নিখোঁজের ১০ দিন পর শিশুটির অন্তর্ধান রহস্যের জট খুলেছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সিপিজেডের আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকা থেকে ঘাতক আবির (২০)কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর একটি টিম। পরে সে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন। তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুসারে ঘটনার সময় শিশুটির পরনে থাকা কাপড়, জুতা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করা হয়।

তবে গতকাল সন্ধ্যায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুটির দেহের খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করা যায়নি। পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, ‘মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে আয়াতদের সাবেক ভাড়াটিয়া আবির আলী ১৫ই নভেম্বর বিকালে তাকে অপহরণ করে।

এ সময় শিশু আলিন ইসলাম চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মরদেহ আকমল আলী সড়কে তার বাসায় নিয়ে ছয় টুকরো করে দুইটি ব্যাগে ভর্তি করে। পরের দিন সকালে কাট্টলীর সাগরপাড়ে ব্যাগ দুইটি ফেলে দেয়।

আসামি আবিরের দেয়া তথ্যানুযায়ী আমরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, আয়াতের পরনের কাপড় উদ্ধার করলেও লাশের টুকরো উদ্ধার করতে পারিনি।’ জানা যায়, আয়াতের খুনি আবির আলী পেশায় একজন গার্মেন্টকর্মী। এক সময় তিনি আয়াতের দাদার ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ভাবতেন আয়াতদের অনেক টাকা পয়সা।

তাই মূলত শিশু আলিন ইসলামকে অপহরণ করে বড় অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করা ছিল তার উদ্দেশ্য। এরমধ্যে ছয় মাস আগে তিনি রাস্তায় একটি মোবাইলের সিম কার্ড পান। শিশু আলিন ইসলামকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে নতুন মোবাইল কিনে ওই সিম সেখানে সংযুক্ত করেন। তবে অপহরণের সময় আয়াত মারা গেলে সে সিম তার আর কাজে আসেনি।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মহানগরের পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বলেন, আবির আলী পেশায় একজন গার্মেন্টকর্মী। এক সময় সে আয়াতের দাদা বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিল। বর্তমানে আকমল আলী সড়কে থাকে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তাকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

একপর্যায়ে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ঘটনার সময় আয়াতের পরনে থাকা জামা, জুতা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি-কাটার উদ্ধার করেছি।