পাহাড়ে মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন

0
48
পাহাড়ে ফলের বাম্পার ফলন
পাহাড়ে ফলের বাম্পার ফলন

পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। মিশ্র ফলের রসালো সুবাস ছড়াচ্ছে পাহাড়ি জনপদে। কাঁচা-পাকা ফলে ভরপুর পাহাড়ের হাট বাজার। আম, কাঁঠাল, লিচু আর আনারসে সয়লাব পাহাড়। প্রতিদিন বসছে এসব মৌসুমি ফলের হাট। এতে ক্রেতাদের আকর্ষণ যেমন বেশি, তেমনি লাভবান হচ্ছেন বিক্রেতারা। দামও সাধ্যের মধ্যে।

পার্বত্যাঞ্চলের গন্ডি পেরিয়ে এসব বাহারি ফল বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। রপ্তানির সঙ্গে আয়ও বাড়ছে কৃষকদের। শুধু হাটবাজারে নয়, অনলাইনেও ব্যবসা জমে উঠেছে এসব মৌসুমি ফলের।

রাঙামাটি জেলা কৃষি তথ্য সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, উপযুক্ত আবহাওয়ার কারণে পার্বত্যাঞ্চল অর্থাৎ তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচুর প্রচুর ফলন এসেছে। তার মধ্যে রাঙামাটি জেলা সদর, নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী, বরকল, জুরাছড়ি, লংগদু, বাঘাইছড়ি, রাজস্থলী উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় এসব মিশ্র ফলের বাগান রয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

রাঙামাটি জেলায় মিশ্র ফলের আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৫৪ মেট্রিক টন। তার মধ্যে আমের বাগান রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩৭২ হেক্টর জামিতে। এসব বাগানে এবার প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন আমের উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে রেগুয়াই ও আম্রপালির বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ে ফলন ভালো হওয়ায় দেশি জাতের পরিবর্তে এখন অধিক চাষাবাদ হচ্ছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচুর। বোম্বে লিচুর ফলনও হচ্ছে উচ্চ পরিমাণে।

শুধু রাঙামাটি জেলায় লিচুর বাগান রয়েছে ১ হাজার ৮৮২ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর লিচুর উৎপাদন হয়েছে ১৭ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন। একই সঙ্গে আনারস ৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ দশমিক ২ মেট্রিক টন। আর কাঁঠাল আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন।

রাঙামাটির মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী মনছুর আলী জানান, ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে দাম একটু কম। আনারসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইতিমধ্যে বাজারে এসেছে আম, কাঁঠাল, লিচু। হিমাগার না থাকার কারণে পচে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার ফল।

রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাঙামাটিতে বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার অধিক। বিশেষ করে উন্নত চাষাবাদের কারণে পাহাড়ে সব মৌসুমে যে কোনো মৌসুমি ফল পাওয়া যায়। এ জন্য পাহাড়কে এখন মৌসুমি ফলের দেশ বলা হচ্ছে।

কৃষকরা যদি আরও একটু সচেতন হন তাহলে এসব ফল উৎপাদনের ধারা ধরে রাখা সম্ভব হবে। তবে এ সম্ভাবনাময় কৃষি খাতকে উন্নয়নশীল করতে পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমি ফল সংরক্ষণ ও কৃষকদের স্বার্থে হিমাগার স্থাপন খুবই প্রয়োজন।