সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচন করা নিয়ে ডাকা বিশেষ সাধারণ সভায় সরকার ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হৈচৈ ও তুমুল হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে বারের সভাপতির শূন্য পদে অ্যাটর্নি জেনারেল এ.এম আমিন উদ্দিনকে মনোনীত করেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা।
সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকা আওয়ামীপন্থী সাত নেতা এ মনোনয়ন দেন। পরে তা কন্টভোটে পাস হয়। তবে বারের সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ বিএনপিপন্থী ছয় নেতা তাতে সমর্থন না দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
গত মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত বারের নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন সরকার সমর্থিত প্যানেল থেকে সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু। একই প্যানেল থেকে সহ-সভাপতিসহ আরও সাতজন নির্বাচিত হন। কিন্তু করোনায় মতিন খসরু মারা গেলে বারের সভাপতি পদটি শূন্য হয়।
এই শূন্য পদে সভাপতি নির্বাচনে মঙ্গলবার (৪ মে) বিশেষ সভা ডাকা হয়। সভার শুরুতে বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ঘোষণা দেন যে, বারের সংবিধান অনুযায়ী তিনি সভা পরিচালনা করবেন। তখন সরকারপন্থী আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন। এ পর্যায়ে বারের আওয়ামীপন্থী প্যানেল থেকে নির্বাচিত সহ-সভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্লাহ দাঁড়িয়ে সভায় সভাপতিত্ব করার ঘোষণা দেন।
তখন ব্যারিস্টার কাজল বলেন, শফিক উল্লাহকে সভাপতিত্ব করার কোনো কার্যবিবরণী পাস হয়নি। সহ-সভাপতি পদে উনার চেয়ে সিনিয়র আরেকজন রয়েছেন।
শফিক উল্লাহ বলেন, আমি আজকের সভার সভাপতি। এই সভা থেকে ঘোষণা করছি, আজ থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাটর্নি জেনারের এ.এম আমিন উদ্দিন।
তখন হলরুমে অবস্থান করা আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা তার প্রস্তাবে সমর্থন দেন। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হৈচৈ ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে মিলনায়তনের বিদ্যুত ও মাইকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। মঞ্চের ওপর ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।
তখন বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সাধারণ সভা করার মতো পরিবেশ-পরিস্থিতি না থাকায় সভা মুলতবি করা হলো। এরপর তারা সভাকক্ষ ত্যাগ করেন।
পরে সহ-সভাপতি শফিক উল্লাহর নেতৃত্বে বারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাত সদস্য রেজুলেশন পাস করে এম আমিন উদ্দিনকে সভাপতি ঘোষণা করেন। সেই রেজুলেশনে সাক্ষর ছিলো না বারের সম্পাদক কাজলসহ কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকা বিএনপিপন্থী ছয় নেতার।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আমি শুনতে পেলাম বিশেষ সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমাকে যদি আবারও সভাপতি নির্বাচিত করা হয় আমি বিগত দুই বছরের মতো বারের উন্নয়নকাজ করে যাব।
প্রসঙ্গত বারের এবারের নির্বাচনে সভাপতিসহ আটটি পদে জয়ী হয় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। আর সম্পাদকসহ ছয়টি পদ পান বিএনপিপন্থী প্যানেল। এর আগের দুটি নির্বাচনে বারের সভাপতি পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন এএম আমিন উদ্দিন। তখন বারের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন তিনি।