সাগরে চলছে মাছের ‘লকডাউন’

0
32
সাগরে চলছে মাছের ‘লকডাউন’
সাগরে চলছে মাছের ‘লকডাউন’

করোনাকালে স্থলে এ পরিস্থিতি হলেও সাগরে যেনো মাছের কঠোর লকডাউন চলছে! লাখ টাকা খরচ করে জেলেরা সাগরে গেলেও জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্ক্ষিত মাছ। এখানে-সেখানে সপ্তাহ খানেক জাল ফেলেও মাছের দেখা না পেয়ে খালি ট্রলার নিয়েও তীরে ফিরছেন অনেকে। এতে রমজানের কারণে বাড়তি চাহিদা থাকলেও বাজারে মাছের দেখা নেই।

কোনো কোনো ট্রলারের ভাগ্যে জুটা যতোসামান্য মাছ বিক্রি হচ্ছে আগুন লাগা দামে। ফলে, সুষ্ঠুভাবে সেহেরি খাওয়া নিয়ে ভুগছে মানুষ। জেলেদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে সাগরে মাছের আকাল চলছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছ সংকটে বাড়তি দামে লোক হয়রানি যেমন হচ্ছে তেমনি লোকসানও গুনতে হচ্ছে তাদের।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সাগরে যাওয়া ট্রলার গুলো বাঁকখালী নদীর তীরে ফিরছে। কিছু কিছু ট্রলারে মাছ নামলেও পরিমাণ একেবারেই কম। আবার অনেকে ফিরেছেন খালি ট্রলার নিয়েই।

জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছের আকাল চলছে। জাল ফেলেও মিলছে না মাছের দেখা। ফলে ট্রলারে খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় যা পেয়েছি তা নিয়ে বা খালি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন ঘাটে।

এফবি আল্লাহর দান ট্রলারের মাঝি ইমরান বলেন, গত বছর এই সময় সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ৫ হাজার ইলিশ পেয়েছিলাম। কিন্তু গত ১২ দিন সাগরে মাছ শিকার করে পেয়েছি মাত্র ৩০০টি ইলিশ। অবশেষে খাদ্য শেষ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ফিরতে হয়েছে ফিশারি ঘাটে।

নুনিয়ারছড়া এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী নাঈম উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র প্রায় প্রতিদিন সকাল-বিকাল ভরা থাকে সামুদ্রিক মাছে। কিন্তু এখন অবতরণ কেন্দ্রে মাছের আকাল।

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সাগরে মাছের আকাল চলায় জেলেদের মাছ শিকারে পাঠাচ্ছেন না অনেক ট্রলার মালিক। ফলে রাজস্ব আদায় কম হচ্ছে। গত বছর কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত মাছ অবতরণ হয়েছিল প্রায় ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ। সে হিসাবে গত বছরের এ সময়ে সরকারি রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৪ লাখ টাকা।

কিন্তু এ বছর একই সময়ে গত রবিবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত মাছ অবতরণ হয়েছে ১ হাজার ৬০১ মেট্রিক টন। আর রাজস্ব আয় হয়েছে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা। এতে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি পড়েছে।