সংসদে শোনা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ১৩০ ভাষণ

0
47
সংসদে বঙ্গবন্ধুর ১৩০ ভাষণ

বিভিন্ন সময়ে দেয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৩০টি ভাষণ শোনা যাচ্ছে জাতীয় সংসদে। রেসকোর্স ময়দানের ৭ মার্চের ভাষণসহ সংসদের বিভিন্ন অধিবেশনে দেয়া ভাষণও শোনা যাচ্ছে সেখানে। সংসদ লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু কর্নারে গেলেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে এসব ভাষণ শোনা যাবে।

সংসদের লাইব্রেরি ঘুরে দেখা গেছে, মুজিব কর্নারে বিশাল আকারে মোবাইল আকৃতির একটি ডিভাইস রাখা। সেখানে ভাষণগুলো তারিখ অনুযায়ী সাজানো রয়েছে। আছে ভাষণের ব্যাপ্তিকালও। আরামদায়ক সোফায় বসে টাচ স্ক্রিনের মাধ্যমে কানে হেড ফোন লাগিয়ে সেই ভাষণ শোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে বাংলাদেশ বেতার থেকে। সেখানে প্রতিনিয়ত বর্তমান ও সাবেক এমপিরা গিয়ে ভাষণ শুনছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ লাইব্রেরির পরিচালক (গ্রন্থাগার ও গবেষণা) মালেকা পারভীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণগুলো সংসদে রাখার কারণে অনেকেই সাধুবাদ জানাচ্ছেন। তবে এতোদিন করোনার প্রকোপ বেশি থাকায় তেমন কেউ আসেননি। এখন অনেকেই আসছেন ও শুনছেন।

জানা যায়, ৭ মার্চ ছাড়াও ১৯৭১ সালের মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণও সেখানে স্থান পেয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ভাষণও রয়েছে সেখানে। তিনি ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি এই ভাষণ দিয়েছিলেন। এছাড়া ১৯৭২ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাংবাদিক সম্মেলনে তার বাসভবনে দেয়া ভাষণও শোনা যাচ্ছে।

সেখানে বসে ভাষণ শুনছিলেন নেত্রকোনা-১ আসনের সাবেক এমপি ছবি বিশ্বাস। তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। এর মাধ্যমে এমপিরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে পারবেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক সাংস্কৃতিক অবস্থাও ফুটে ওঠেছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে।

এদিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের ত্রিমাত্রিক ভিডিও ‘পিতা’র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১ মার্চ থেকে এটি চালু হয়েছে। জনসাধারণের জন্য মাসব্যাপী এ প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।

এবিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে তৈরি ত্রিমাত্রিক ভিডিও ‘পিতা’ এক্ষেত্রে স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে।

অন্যদিকে জাতির পিতার ১০০ বাণী নিয়ে কোলাজ করেছে জাতীয় সংসদ। বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই কোলাজ তৈরি করা হয়েছে। আলো-ছায়ার দৃষ্টিনন্দন এই কোলাজ এখন সংসদ লাইব্রেরির দরজায়। এছাড়া সংসদের লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু কর্নার এখন নানা ধরনের বইয়ে সমৃদ্ধ।

সংসদ ভবন সূত্রে জানা যায়, সংসদ সচিবালয়ের গ্রন্থাগারে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ভাষণ বা বিবৃতির কোটেশন নিয়ে একটি কোলাজ প্রদর্শনীর জন্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে জাতির পিতার বিভিন্ন ভাষণ বা বিবৃতি ও বিভিন্ন গ্রন্থ যেমন-অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন ইত্যাদিতে উল্লেখিত উল্লেখযোগ্য দুটি উদ্ধৃতি (সোর্সসহ) হার্ডকপি চাওয়া হয়।

তবে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ থেকে উদ্ধৃত উক্তিসমূহ বহুল ব্যবহৃত বিধায় অন্যান্য কোটেশনকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সেরা উদ্ধৃতিগুলো একত্রিত করে এই কোলাজ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

এ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান সংসদের অতিরিক্ত সচিব মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখন কোলাজ প্রদর্শন করছি। এগুলো লিফলেট আকারে এমপিদের মধ্যে বিতরণের চিন্তা-ভাবনা চলছে। এছাড়া বই আকারেও প্রকাশ করা হবে।’

সংসদের লাইব্রেরিতে চালু হওয়া বঙ্গবন্ধু কর্নার এখন বিভিন্ন ধরনের বইয়ে কানায় কানায় পূর্ণ। এই কর্নারের পাশাপাশি রাখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার। লাইব্রেরিতে প্রবেশের মুখেই এই দুটি কর্নার। এখানে থরে থরে সাজানো আছে সংশ্লিষ্ট বই। সম্প্রতি তিন কোটি টাকা ব্যয়ে লাইব্রেরির সংস্কার করার সময় এই দুটি কর্নার স্থাপন করা হয়।