
শীতের অভিজাত ফুল ক্যালেন্ডুলা। এই ফুল ছাড়া বাগানের সৌন্দর্য যেন অনেকটাই অসম্পূর্ণ। ক্যালেন্ডুলা আমাদের দেশে অনেক আগেই এসেছে; এ কারণে মৌসুমি ফুলের বাগানগুলোতে মোটামুটি সহজলভ্য। ইদানীং রাজধানী ছাড়িয়ে মফস্বল শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। আসছে আরও নতুন নতুন আবাদিত জাত। এগুলোকে কেউ কেউ ভুল করে জার্বেরা বা জিনিয়াও ভাবেন।
একসময় ইংল্যান্ডে সুগন্ধি সাবান তৈরির জন্য এদের পাপড়ি ব্যবহার করা হতো বলে এরা পট মেরিগোল্ড নামেও সুপরিচিত। তা ছাড়া ঔষধি গুণের জন্যও এ ফুল ব্যবহূত হতো।
এরা মূলত দক্ষিণ ইউরোপের প্রজাতি। গাছ ঝোপাল, ৩০ থেকে ৬০ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পাতা লম্বা, খসখসে, রোমশ এবং কিছুটা আঠালো। বৃন্তের ওপর প্রায় ১০ সে.মি. চওড়া বড়সড় ফুলগুলো চ্যাপ্টা ধরনের, থাকে জোড়ায় জোড়ায়। রং গাঢ় কমলা, ক্যানারি-হলুদ, ঘন হলুদ এবং কমলা লাল।
জোড়া ফুলের পরিচিত জাতগুলো হলো- বল, ক্যাম্পফায়ার, গোল্ডপিঙ্ক গ্রান্ডিফ্লোরা, প্যাসিফিক বিউটি, পার্সিমোন বিউটি, অরেঞ্জ কিং, অরেঞ্জ সান, রেডিও, হলুদ কলোসাল ইত্যাদি। নোভা জাতের ফুলগুলো জার্বেরার মতো একক, রং কমলা, কেন্দ্রের দিকটা গাঢ় চকলেট বর্ণের।
নতুন জাতের ভোলানেকস ক্রেস্টেড মিক্স ফুলগুলো ভারি সুন্দর। একসারি করে পাপড়ি, কেন্দ্রস্থল সরু সরু নলের ঝুঁটির মতো বা ভাঁজ করা। ক্যালেন্ডুলা ব্যবহৃত হয় ভূমিশয্যায় এবং কলম করার কাজে। টবেও চাষযোগ্য। ভালো ফলনের জন্য সূর্যের আলো এবং সেচ দুটোই দরকার। বীজ বপনের সময় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস।
আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে ক্যালেন্ডুলা ফুল ফোটে। তবে পাহাড়ি ও বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে সময়ের কিছুটা তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। আমাদের বাগানগুলোতে চারার মাধ্যমেই চাষ। পাতার রস কৃমি দমনে কাজে লাগে। বীজ থেকে চারা হয়। দক্ষিণ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়।