
মহামান্য প্রিন্স রহিম আগা খান পঞ্চম তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে শিয়া ইসমাইলি মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের স্বাগত জানান, এবং সেখানে তাঁর পরিবারের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
আগা খানের মৃত্যুর পর ইসমাইলি মুসলমানদের আধ্যাত্মিক নেতা ও নতুন আগা খান হিসেবে মনোনীত হয়েছেন রাহিম আল-হুসাইনি (৫৩)।
আজ (১১ই ফেব্রুয়ারি) রাজ্যগ্রহণ অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত মর্যাদার সাথে লিসবন, পর্তুগাল এর ইসমাইলি ইমামাতের দিওয়ানে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বজুড়ে ইসমাইলি সম্প্রদায়ের নেতারা প্রিন্স রহিম আগা খান পঞ্চম কে ৫০তম অধিকারী ইমাম হিসেবে স্বীকার করে নেন এবং তাঁর প্রতি আধ্যাত্মিক আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দেন।
৩৫টিরও বেশি দেশের ইসমাইলি সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের জামাতখানায় (গোত্রের মিলনস্থান) লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
প্রিন্স রহিম আগা খান পঞ্চম তাঁর বক্তৃতায় প্রয়াত পিতা প্রিন্স করিম আগা খান চতুর্থকে শ্রদ্ধা জানান এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁর পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি পর্তুগাল ও মিশরের সরকারকে তাঁর পিতার অবদানের জন্য সম্মান জানিয়ে, মর্যাদাপূর্ণভাবে জানাজা ও দাফন সম্পাদনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
এটি ছিল আগা খান পঞ্চমের প্রথম আন্তর্জাতিক ইসমাইলি সম্প্রদায়ের সামনে বক্তৃতা। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে তিনি তাঁর জীবনকে ইসমাইলি জামাতের আধ্যাত্মিক এবং ভৌত কল্যাণে নিবেদিত করবেন।
তিনি ইসমাইলি মুসলিম ধর্মের মূলনীতি, পৃথিবীজীবন ও আধ্যাত্মিকতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা এবং ধর্মীয় অনুশীলনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁর বার্তা ছিল শান্তি, সহিষ্ণুতা, অন্তর্ভুক্তি এবং দরিদ্রদের সহায়তার মতো সার্বজনীন মূল্যবোধের উপর।
তিনি বলেন, তিনি চান তাঁর সম্প্রদায়ের সদস্যরা যেখানে বাস করছেন সেখানে সৎ এবং সক্রিয় নাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুক এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে নেতৃত্ব দিক।
কয়েক দশক ধরে আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক এর কাজে নিবেদিত, মহামান্য প্রিন্স রহিম আগা খান পরিমিত গতিতে পরিবর্তন ও স্থিতিশীলতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি সরকারের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার এবং তাঁর পিতার মতো শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সুযোগের জন্য তাদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
উল্লেখ্য, প্রিন্স রহিম আগা খান জেনেভা ও প্যারিসে বড় হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে সাহিত্য এবং বার্সেলোনায় ব্যবসা বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। পরে তিনি আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (একেডিএন) এ যোগ দেন। এটি আগা খানের প্রধান দাতব্য সংস্থা, যা মূলত স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন, শিক্ষা এবং গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে কাজ করে। এটি ৩০টিরও বেশি দেশে কাজ করছে এবং এর বার্ষিক বাজেট প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থ অলাভজনক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যয় করা হয়।