বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আমি কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকাল ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত চিন্তার সংগঠন ‘চিন্তাঙ্গন’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান, প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামান ও সকল সহকারী প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. শরাফত আলী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়াসহ সকল হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিভিন্ন শিক্ষকগণ।
সভায় ক্যাম্পাসের সক্রিয় সকল ছাত্র সংগঠন, সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক ক্লাবের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের অংশ হিসেবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, অডিটরিয়াম ও টিএসসি নির্মাণ, গবেষণা সহায়ক প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ সমেত ল্যাব সংস্কার, লাইব্রেরির আধুনিকায়ন, ক্যাফেটেরিয়া ও হলের খাবারের মান বৃদ্ধি, সেশনজট নিরসন, অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠন ও সমাবর্তন আয়োজন, যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদানসহ শিক্ষক সংকট দূরীকরণ, মেডিকেল সেন্টারের সেবার মান বৃদ্ধি, মাদক বিক্রি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলা, ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ, ভর্তি প্রক্রিয়া ও ফরম পূরণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজে ডিজিটালাইজেশন করা এবং মেধার ভিত্তিতে আবাসিকতা প্রদান প্রভৃতি দাবি তুলে ধরেন।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, আমি সবেমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। গত ১০ বছরে যা সমাধান করা হয়নি, তা করতে অবশ্যই সময় দিতে হবে। সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
কেবল চিৎকার করে দাবি জানালেই কোনো কিছুর সমাধান হয়ে যাবে না। আমাদের চিন্তা চেতনায় সৎ হতে হবে, তাহলেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এই বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিকতার বেড়াজালে আবদ্ধ রয়েছে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রয়েছে অপার সম্ভাবনা।
শিক্ষার্থীদের আমাদের ওপর আস্থা রাখতে হবে, আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আঞ্চলিকতা মুক্ত করে নতুন করে গড়বো। আমরা শুরুতেই শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করতে পারি, দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারি, সেটা দিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করবো।
সভায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান দুর্নীতি না হওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমরা কখনোই কোনো অনিয়ম, অরাজকতা প্রশ্রয় দেবো না। শিক্ষকরা যেমন পড়াশোনা করাবেন, গবেষণা করাবেন, জ্ঞান উৎপাদন করবেন, তেমনই শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিনেন্স মেনে চলে সুষ্ঠু পরিবেশ গড়তে সহায়তা করবেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মের পাহাড় জমেছে, নিয়ম ছাড়া এখানে বাকি সব আছে।
কিন্তু আমরা কথা দিচ্ছি, এখন থেকে কোনো অনিয়ম হবে না। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়তে হলে যাবতীয় মতভেদ ভুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমিও বলছি, এতো সমস্যা এক সাথে সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে আশা রাখো, সময় দাও, আমরা কথা দিচ্ছি, আমরা গড়তে এসেছি, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়েই যাবো। এ সময় শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিদাওয়া দ্রুত পূরণের আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কে এম আবু বক্কর বৃহত্ত ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি