গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ভাদুলিয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সার্বজনীন রক্ষা চন্ডী মন্দিরের জায়গা দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সংক্রান্তে ভাদুলিয়া গ্রামের মৃত কালীচরণ বিশ্বাসের ছেলে ও উক্ত মন্দির কমিটির সদস্য রবিন বিশ্বাস (৩০) গত ২৩ সেপ্টেম্বর কাশিয়ানী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সূত্রঃ কাশিয়ানী থানার জিডি নং- ১০৩৭, থানায় দেওয়া অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মন্দির সংলগ্ন আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাসের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩০) ও রাজিব ইসলাম (২৮) এবং স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪৮) ভাদুলিয়া গ্রামের প্রাচীনতম সার্বজনীন রক্ষা চন্ডী মন্দিরের জায়গা জোর করে দখলের পায়তারা করেন।
উক্ত মন্দিরের রেজিঃ নং -১২২৮৯ গোপাঃ/ কাশিঃ/২৩৫। ৮৮ নং ভাদুলিয়া মৌজায় বি,আর,এস খতিয়ান – ০৯, বি,আর,এস দাগ নং – ১৯০৭, ১৯০৮, ১৯১১, ১৯১১/২৪০৯ তে জমির পরিমাণ ০৭ শতাংশ ও বি,,আরএস খতিয়ান – ১৩, বি,আর,এস দাগ নং – ১১৮৭, ১১৮৮ তে জমির পরিমাণ ০৫ শতাংশ এবং বি,আর,এস খতিয়ান -১৬৩০, বি,আর,এস দাগ নং – ১১৮৯, ১৯১২ তে জমির পরিমাণ ০৯ শতাংশ। সর্বমোট ২১ শতাংশ জমিতে মন্দির রয়েছে।
দীর্ঘদিন যাবত মন্দিরের বি,আর,এস খতিয়ান -১৬৩০ বি,আর,এস দাগ নং ১১৮৯, ১৯১২ তে ০৯ শতাংশ জমি গত রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে জোরপূর্বক দখল করার পায়তারা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এসময় অভিযোগকারী সহ মন্দির কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ বাঁধা দিলে তাদেরকে খুন-জখম করার হুমকি দেয় অভিযুক্তরা।
পরে আইনী প্রতিকার চেয়ে ৯৯৯ -এ ফোন দিলে কাশিয়ানী থানার এসআই মোজাম্মেল ও এসআই গৌতম ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ থানায় যোগাযোগ করতে বলেন।
পুলিশ চলে যাওয়ার পরেই তারা জোর করে টিনের বেড়া দেওয়া শুরু করেন। এ বিষয়ে সরেজমিনে ভাদুলিয়া গ্রামে গিয়ে সার্বজনীন রক্ষা চন্ডী মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক (প্রতিবন্ধী) সবুজ মৃধা, লাকি বিশ্বাস, মালতী মৈত্র, শিপ্রা বিশ্বাস, তারোক বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তারা বলেন, এর আগেও অভিযুক্তরা মন্দিরের ওই জায়গা জোর করে দখলের চেষ্টা করেছেন।
আদালত এর আগেও মন্দিরের নামেই রায় দিয়েছেন। পুলিশ চলে যাওয়ার পর তারা মন্দিরের পিছনের টিন খুলে মন্দিরে ঢুকে কাঠ বের করে মন্দিরের সামনে জোর করে টিনের বেড়া দেয়। এসংক্রান্তে গত ২৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভাদুলিয়া রক্ষা চন্ডী মন্দিরের পক্ষে অনিমেষ বিশ্বাস (সদস্য) একটি মিস পিটিশন- ৫৮১/২০২৪ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম ও রাজীব ইসলামের পিতা আঃ রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, ওই জায়গা আমাদের, আমরা আমাদের জায়গায় কাজ করবো। আমিই টিনের বেড়া দিয়েছি।
পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। জায়গা যদি তাদের হয়, তাহলে আমি টিনের বেড়া খুলে নিবো।
কাশিয়ানী থানার এসআই মোজাম্মেল এ বিষয়ে বলেন, জরুরী সেবা ৯৯৯ -এ ফোন পেয়ে আমি এবং এসআই গৌতম ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দিকনির্দেশনা দেই এবং সেই সাথে বিজ্ঞ আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত টিনের প্রাচীর নির্মাণ না করার নির্দেশ দেই।