গোপালগঞ্জে অজ্ঞাত এক নারীর (৩০) লাশ উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ। এলাকাবাসীর ধারণা জেলা সদরের শেখ মণি স্টেডিয়াম ও কোর্ট মসজিদ সংলগ্ন চাঁদমারি রোডের বহুতল বিশিষ্ট ইউনুছ টাওয়ারের ৮ তলার ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন অজ্ঞাত ওই নারী।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বেলা আনুমানিক ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ইউনুছ টাওয়ার সংলগ্ন টিনের চালের ওপর বিকট শব্দ শুনে যে বাড়িতে লাশ পাওয়া গেছে সেই বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা দৌঁড়ে এসে ওই নারীকে ছটফট করতে দেখেন, কিছুক্ষণ পরেই সে মারা যায়।
তবে নিহতের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ভবনের কোন ভাড়াটিয়ারাও নিহত ওই নারীকে চেনেন না বলে জানা গেছে। তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন? ওই নারী ছাদে গেল কিভাবে?
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী প্রবাল বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি বলেন, টিনের ওপরে পড়া বিকট শব্দ শুনে আমি দৌঁড়ে এসে দেখি একজন নারী গুরুতর আহত অবস্থায় ছটফট করছে, আমি তাকে পানি খাওয়ানোর চেষ্টা করি, পরে সে মারা যায়। তবে আমরা যে শব্দ শুনেছি তাতে বোঝা যায় মেয়েটি অনেক ওপর থেকে পড়েছে।
এ বিষয়ে যে বাড়িতে লাশটি পাওয়া গেছে সেই বাড়ির মালিক মুহিদুল ইসলাম বলেন, আমি নামাজের জন্য অজু করতে গিয়েছিলাম হঠাৎ আমার টিনের ওপর বিকট একটা শব্দ শুনি, বের হয়ে দেখি একটি নারী পড়ে ছটফট করছে। ওপর থেকে পড়ায়, আমার টিনের চালের বারান্দা ভেঙ্গে গেছে। আমার বাড়ির আশপাশে একটাই বিল্ডিং রয়েছে, আমার ধারণা ওই বিল্ডিং এর ছাদ থেকে ওই মেয়েটি পড়েছে। তবে কিভাবে পড়েছে তা আমি জানিনা।
ঘটনাস্থলের দক্ষিন পাশের বাড়ির মালিক মাসুম বিশ্বাস বলেন, আমি বাসা থেকে বিকট একটা শব্দ শুনতে পাই, মনে হল টিনের ওপর কিছু একটা পড়েছে। ছুটে এসে দেখি একটি মেয়ের মরদেহ পড়ে আছে। তবে যে শব্দটা হয়েছে তাতে বোঝা গেল অনেক ওপর থেকে পড়েছে। এলাকাবাসী আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ওই মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ও পিবিআই এর তদন্ত টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহত নারীর পরিচয় প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনিচুর রহমান লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তের জন্য লাশটি থানায় প্রেরণ করা হয়। পরে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান জানান, দুপুরের দিকে মহিদুল ইসলামের বাড়ির টিনের চালে হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়। এসময় বাড়ির লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে ওই নারীর মরদেহ দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরো জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে এটি হত্যা? না কি আত্মহত্যা? বিষয়টি আমরা গভীরভাবে তদন্ত করছি। তবে এখন পর্যন্ত নিহতের নাম পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আবু বক্কার