ডায়রিয়া প্রকোপ মোকাবিলায় রাজধানীর ২৩ লাখ মানুষকে মুখে খাওয়ার কলেরা টিকা দেবে সরকার। গর্ভবতী নারী ছাড়া ১ বছর বয়স থেকে বড় সব বয়সের মানুষকে এ টিকা দেওয়া হবে।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় দেশের চলমান ডায়রিয়া সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, দুই ডোজের এই টিকা কর্মসূচির প্রথম ডোজ দেওয়া হবে মে মাসে। সবমিলিয়ে ২৩ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে জুনে।
তিনি বলেন, প্রথম ধাপে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় এই টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সেগুলো হলো- যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, সবুজবাগ।
টিকা গ্রহণের প্রক্রিয়া কেমন হবে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, টিকা কার্যক্রমটি নিয়ে আমরা এখনও কাজ করছি। এই টিকা গ্রহণ করতে হলে আলাদা কোনো নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। নির্দিষ্ট তারিখ ও কেন্দ্র বাছাই হলে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। নিকটস্থ কেন্দ্রে গেলেই টিকা নেওয়া যাবে।
ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের সুস্থ ব্যবস্থাপনায় এবং ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডায়রিয়া রোগীদের সুস্থ ব্যবস্থাপনার জন্য হাসপাতালগুলোতে অতিরিক্ত বিছানার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ডায়রিয়া ওয়ার্ড চালু করা হচ্ছে। ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসায় চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে ৬০ জনের বেশি চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ, আইভি স্যালাইন, মুখে খাওয়ার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি চাহিদা অনুয়ায়ী পাঠানো হচ্ছে। সব বিভাগীর ভান্ডারে পর্যাপ্ত আইভি স্যালাইন মজুত করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সব উপদ্রুত এলাকায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
সারা দেশে মোট ৪ হাজার ৫২৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। হাসপাতালগুলোতে ৫০০ মিলি ব্যাগ আইভি স্যালাইন মজুত আছে ৩ লাখ ৩০ হাজারটি, ১০০০ মিলি ব্যাগ আছে ৪ লাখ। এছাড়াও ১০০০ মিলি ব্যাগের আরও ১ লাখ ৬০ হাজার আইভি স্যালাইন শিগগিরই ক্রয় করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ডায়রিয়া প্রকোপ রোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। কেউ ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে খাবার স্যালাইন গ্রহণের পাশাপাশি নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। জেলা-উপজেলাসহ আমাদের প্রতিটি হাসপাতালই প্রস্তুত রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডায়রিয়া হলেই আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালটির নাম মাথায় চলে আসে। কারণ এই হাসপাতালটির আগে নাম ছিল কলেরা হাসপাতাল। এই কারণেই মানুষ হাসপাতালটিতে এসে ভিড় জমাচ্ছে। কিন্তু আমাদের প্রতিটি হাসপাতালই ডায়রিয়া চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত।