শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে অচল হয়ে পড়েছে দেশটির সব কার্যক্রম। এমন অবস্থায় দেশটিতে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছে সাধারণ মানুষ। তবে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। লঙ্কান সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসে তার দলের শীর্ষ নেতাদের সোমবার (৪ এপ্রিল) জানান যে, মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সংসদ অধিবেশনে কোনো দল যদি ১১৩টি সিটের সমর্থন পায় তখনই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে প্রস্তুত তিনি।
দেশটিতে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের তীব্র সংকট ও জনগণের বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো সংসদ আহ্বান করা হচ্ছে এবং কোন দল ১১৩টি বা তার বেশি আসন ধরে রাখে তা দেখার জন্য একটি ভোট নেওয়া হবে।
যদিও এখনো গোটাবায়ে রাজাপাকসে ১১৩টি সিট ধরে রাখার তৎপরতা চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে গোটাবায়ের দল এবং মাহিন্দা রাজাপাকসেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকতে পারবেন।
তবে সরকার যদি তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে ব্যর্থ হয় তাহলে নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তার জন্য স্পিকারের কাছে একটি প্রস্তাব দেওয়া হবে এবং প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ঠিক সেভাবে সরকার নতুন দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসের সরকার। চলছে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভের শঙ্কায় সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দুই কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ শনিবার সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হয়। কারফিউ চলবে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার।
দেশটিতে অর্থনীতি ধসে পড়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাতে কলম্বোর মিরিহানায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকশ মানুষ। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন। বিক্ষোভের ঘটনায় ৪৫ জনকে আটক করা হয়।