আজ থেকে শুরু সিয়াম সাধনার মাস

0
43
আজ থেকে শুরু সিয়াম সাধনার মাস
আজ থেকে শুরু সিয়াম সাধনার মাস

আজ থেকে শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে দীর্ঘ একমাস চলবে সিয়াম সাধনা। ‘রমজান’ শব্দটি এসেছে আরবি ‘রমজ’ থেকে। এর অর্থ দহন বা পোড়ানো।

শনিবার (২৯ শাবান) সূর্যাস্তের পরই দেশের আকাশে পবিত্র সিয়ামের চাঁদ দেখা যায়, যার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান।

দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রমজানের চাঁদ দেখে তারাবির নামাজ আদায় ও প্রথম রোজার সেহরি করেছেন। রোববার (৩ এপ্রিল) প্রথম রোজা। ঢাকায় এদিন ইফতারের সময় ৬টা ১৯ মিনিটে।

হজরত সালমান ফার্সি (রা.) বর্ণনা করেন, শাবান মাসের শেষ দিনে নবি কারিম (সা.) মিম্বরে বসে বলেন, হে লোকজন! তোমাদের ওপর এক মহা ও বরকতময় মাস আগত প্রায়। এমন মাস, যার মধ্যে এমন একটি রাত (শবেকদর) আছে যা হাজার মাস থেকে উত্তম। (অর্থাৎ ওই এক রাতের ইবাদতের সওয়াব হাজার মাসের থেকে বেশি) আল্লাহতায়ালা এ মাসে দিনেরবেলা রোজা ফরজ করেছেন আর রাতে ইবাদতকে করেছেন নফল।

এ মাসে যে ব্যক্তি নেক আমলের দ্বারা আল্লাহতায়ালার নৈকট্য অর্জনের প্রত্যাশী হবে, তার অবস্থা এরূপ যে কেমন যেন সে অন্য মাসে ফরজ আদায় করেছে। অর্থাৎ নফলের সওয়াব ফরজের সমতুল্য হবে। আর যে ব্যক্তি এ মোবারক মাসে কোনো ফরজ আদায় করবে তার অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায়ের সমান সাওয়াব হবে।

অর্থাৎ রমজানে এক ফরজের সাওয়াব সত্তর গুণ বেড়ে যায়। রমজান সবরের মাস, আর সবরের সাওয়াব ও বদলা হলো জান্নাত। এ মাস মানুষের সঙ্গে সদাচার ও কল্যাণকামিতার মাস। এ মাসে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।

আর জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরওয়ানা মিলবে। সঙ্গে সঙ্গে রোজাদারের সওয়াব কম করা ছাড়াই ইফতার করানো ব্যক্তি রোজার অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! (সা.) আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ এমন রয়েছে, যাদের এ সামর্থ্য নেই যে, তারা অন্যকে ইফতার করাবে, আর এমন সওয়াব লাভ করবে।

এ প্রশ্ন শুনে নবি কারিম (সা.) এমন জওয়াব দিলেন যা শুনে তাদের হতাশা ও কষ্টগুলো আশা এবং আনন্দে পরিণত হলো। তিনি (সা.) বললেন, আল্লাহতায়ালা এসব পুরস্কার ওইসব ব্যক্তিদেরও দেবেন, যারা কোনো রোজাদারকে এক ঢোক দুধ, একটি খেজুর, এমনকি এক ঢোক পানি পান করাবে। তবে যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পেট ভরে খাওয়াবে আল্লাহতায়ালা তাকে কেয়ামতের দিন আমার হাউজে কাওসার থেকে এমন পানি পান করাবেন যে তারপর চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশের আগে তার আর পিপাসা লাগবে না।

এরপর নবি কারিম (সা.) বলেন, সিয়ামের মাস এমন মাস, যার প্রথম দশক রহমত, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত আর শেষ দশক জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশক। যে ব্যক্তি এ মাসে তার গোলাম (কর্মচারী, চাকর, এক কথায় অধীনস্থ প্রত্যেক ব্যক্তি) থেকে কাজের বোঝা বা দায়িত্ব হালকা করে দেবে আল্লাহতায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন।

হে লোকজন! এ মাসে চারটি জিনিসের ওপর খুব গুরুত্ব দাও এবং বেশি বেশি করে কর। ১. কালিমা তাইয়্যেবা-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু। ২. ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা। ৩. জান্নাত চাওয়া। ৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করা। (মেশকাত শরিফ : ১/১৭৪, বায়হাকি, শুয়াবুল ইমান ৩/৩০৫)।