বরিশাল বিভাগে এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজ উৎপাদনে বিগত দিনের রেকর্ড ভেঙেছে। পাশাপাশি উৎপাদিত তরমুজ সুস্বাদু এবং আকারেও তুলনামূলক বড়।
প্রথম দেখাতেই আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতা। ফলে দাদনের টাকা পরিশোধ করেও লাভ ঘরে তুলতে পারছেন বলে জানিয়েছেন কৃষক ও আড়তদার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, অল্প সময়ে অধিক ফলনে মৌসুমি ফল তরমুজের বিকল্প নেই। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় ভূমি নদীবিধৌত পলি মাটির আস্তরণে তরমুজ চাষের উপযোগী।
যে কারণে ঝুঁকি নিয়েই প্রতি বছর আবাদ করেন কৃষক। খামারবাড়ি বরিশালের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে (২০২১-২২) বিভাগের ছয় জেলায় ৪৬ হাজার ৪৫১ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। যা গত মৌসুমের (২০২০-২১) চেয়ে ১১ হাজার ৭৬৩ হেক্টর বেশি। কারণ বিগত মৌসুমে ছয় জেলায় ৩৪ হাজার ৬৮৮ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষ হয়েছে পটুয়াখালী, বরগুনা এবং ভোলা জেলায়।
তুলনামূলক কম চাষ হয়েছে বরিশাল, পিরোজপুর এবং ঝালকাঠিতে। এর মধ্যে পটুয়াখালীতে ২২ হাজার ৮৯০ হেক্টর, বরগুনায় ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর, ভোলায় ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর, বরিশালে ৬৪৬ হেক্টর, পিরোজপুরে ১০৬ হেক্টর এবং ঝালকাঠিতে ৪৮ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে।
উপজেলার চর কাজল ইউনিয়নের চাষি মেহেদী হাসান বলেন, দেড় কানি জমিতে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করে তরমুজ চাষ করে দুই দফায় ৫ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি।
এখনো ক্ষেতে আছে। সেগুলোও বিক্রি করব। এই চাষী বলেন, এ বছর অনেক ভালো ফলন হয়েছে। কারো কারো ক্ষেত লবণ পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু আমার ক্ষেতে চমৎকার ফলন হয়েছে বলে লাভ ঘরে তুলতে পেরেছি। এখন পর্যন্ত যত তরমুজ বাজারে এসেছে তারও বেশি এখনো ক্ষেতে রয়ে গেছে। এ বছর তরমুজের কোনো ঘাটতি হবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তরমুজ চাষে কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা না হলেও প্রতিবছরই তরমুজ চাষ বাড়ছে। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তরমুজ উৎপাদন হয় বরিশাল অঞ্চলে। সারাদেশে বরিশাল অঞ্চলের তরমুজের চাহিদাও বেশি। আমরা আশা করছি, এ বছর সব কৃষকই লাভবান হবেন।