‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যারা আমাদের বিনা কারণে, বিনা দোষে র্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করলে কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় না।’
— মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বিনা অপরাধে র্যাব এবং বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অপরাধের ক্ষেত্রে বিচারহীনতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকার র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে সোমবার সকালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে যোগ দিয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান প্রধানমন্ত্রী। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, সেখানে বাচ্চা ছেলেকে গুলি করে মারল, রাস্তায় ফেলে পা দিয়ে গলা চেপে (জর্জ ফ্লয়েড) মেরে ফেলল। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে কেউ অপরাধ করলেও শাস্তি দেওয়া হয় না। কিন্তু পৃথিবীতে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, এখানে কেউ অপরাধ করলে আমরা শাস্তির বিধান করি।’
র্যাবের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জলদস্যু, বনদস্যু বা মাদক, বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সাফল্য আমি জানি না, আমাদের এ সাফল্যগুলোতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কোনো দুঃখ পেয়েছে কি না। বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছে, এটাই হলো সত্য। সেক্ষেত্রে এ ধরনের র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর স্বীকৃত খুনিকে স্থান দিয়েছে। সেখানে যুদ্ধাপরাধীরা স্থান পেয়েছে, জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিও বসবাস করে। তাদের ফিরিয়ে দিতে আমরা বারবার তাদের অনুরোধ করছি, প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিচ্ছি, একের পর এক প্রেসিডেন্ট আসছে, আমরা তার কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি। জাস্টিজ ডিপার্টমেন্টে আমরা জানিয়েছি, এরা অপরাধী, শিশু ও নারী হত্যাকারী, খুনি। তাদের আমাদের দেশে ফেরত দিতে হবে। কিন্তু তারা অপরাধীদের রক্ষা করে, তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়। এটা যাদের চরিত্র, তাদের বিষয়ে আর কী বলব!’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ডিসেম্বর মাসে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খান।