৭ই মার্চের ভাষণ যুগে যুগে প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

0
41
আজ আমিরাত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
আজ আমিরাত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীআজ আমিরাত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতিকে যুগে যুগে প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে স্বাধীনতার জন্য দেওয়া কোনো ভাষণই পুনরাবৃত্তি হয়নি। কিন্তু ৭ই মার্চের ভাষণ চিরন্তন হিসাবে বিশ্বের বুকে উদ্ভাসিত থাকবে।

সোমবার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। বক্তব্য শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে স্বাধীনতার জন্য যত ভাষণ দেওয়া হয়েছে কোনোটাই কিন্তু পুনরাবৃত্তি হয়নি কখনো। যেদিনের ভাষণ, সেদিনই ওইটা শেষ হয়ে গেছে। এই ভাষণটা আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পর্যন্ত আমাদের বারবার প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে।

৭ই মার্চের ভাষণ যুগে যুগে প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, একটি মাত্র ভাষণ, এটা কত ঘণ্টা, কত দিন বাজানো হয়েছে। এটা মনে হয় হিসাব করাটা একটা কঠিন ব্যাপার। এটাকে যুগ যুগ ধরে আমরা শুনছি। কত কোটি কোটি মানুষ এই ভাষণটা শুনেছে। যতই বাধা দেওয়া হয়েছে, ততই মনে হয় এই ভাষণটা উদ্ভাসিত হয়েছে। এখনো আমাদের এই ভাষণ অনুপ্রেরণা দেয়।

সাতই মার্চের ভাষণের প্রতিটি লাইনকে কবিতার অংশ মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, এ ভাষণ মানুষের ভেতরে, অন্তরে অন্যরকম অনুভূতি এনে দেয়, প্রেরণা দেয়। এই ভাষণের যে ঐতিহাসিক কথা, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ একাত্তর সালে যখন মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলো তখন এই ভাষণটাই ছিলো তাঁদের প্রেরণা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিয়মিত তা বাজানো হতো।

‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে বিশ্বের অনেকেই গবেষণা করেছিলো। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর স্বাধীনভাবে বাজানোর সুযোগ পায়। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা থেমে থাকেনি। পঁচাত্তরের পরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাষণটা বারবার বাজিয়েছে।’

সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা ভাষণ শেষ করেছিলেন জয় বাংলা বলে। মানে হলো বাঙালির জয়, বাংলার মানুষের জয়। জয় বাংলা স্লোগানটা, প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা যখনই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, শত্রুকে আঘাত করতে গেছে, তখনই এই স্লোগানটা দিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে যারা বন্দি হয়েছে, দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, এই স্লোগান দেওয়ার জন্য। কিন্তু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই স্লোগানটাই দিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, একটি জাতির জীবনের এতবড় আত্মত্যাগ এক সময় মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিলো। আমার আত্মবিশ্বাস আর কোনোদিন কেউ এই ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে না। ৭ই মার্চের ভাষণ চিরন্তন ভাষণ হিসাবে বিশ্বের বুকে উদ্ভাসিত থাকবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকে এটি প্রমাণিত সত্য যে, সত্য কেউ কখনো মুছে ফেলতে পারে না। আর ৭ই মার্চের ভাষণেই তো জাতির পিতা বলে গেছেন যে, কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। বাঙালিকে কেউ দাবায়া রাখতে পারে নাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখনই ভাষণ দিতে যাবেন তখন অনেক রাজনৈতিক দল, অনেক ছাত্রনেতা পরামর্শ দিতে থাকে যে, কী করা উচিত। কয়েকটা ছাত্রনেতা তো বলেছিলেন যে আজ সরাসরি তো স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেই হবে। না হলে তো মানুষ হতাশ হয়ে যাবে এমনটাও বলেছিল। আমাদের কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী অনেকে অনেক পয়েন্ট লিখে দিয়ে গেছেন। অনেকেই পরামর্শ দিয়ে গেছেন। আমাদের বাসাটা তখন উন্মুক্ত ছিল। সকলের জন্য খোলা ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমার আব্বাকে আমার মা একটা কথাই বলেছিলেন, সারাটা জীবন তুমি সংগ্রাম করেছে এদেশের মানুষের জন্য। তুমি জানো এদেশের মানুষের জন্য কোনটা ভালো। তোমার মনে যেটা আসবে তুমি ঠিক সেটাই বলবা। তোমার কারো কথা শোনার প্রয়োজন নাই। আজ আপনারা যে ভাষণটা দেখেন তার (বঙ্গবন্ধুর) কাছে কিন্তু কোন কাগজ নাই, কিছু নাই। তিনি একাধারে বঞ্চনার ইতিহাস পড়ে যাচ্ছেন।’

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।