
আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় রায় এসেছে দেড় বছর পর। দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করা ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ এসেছে বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে।
রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত ও পুলিশের তিন সোর্সসহ ছয়জনের। রায়ে সাজাপ্রাপ্ত আটজনের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও করা হয়। এছাড়া অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে এপিবিএনের তিন সদস্যসহ সাতজনকে।
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার বেলা সোয়া চারটার দিকে এই রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পুলিশের এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, রুবেল শর্মা, মোহাম্মদ আইয়াজ আয়াছ, সাগর দেব, নুরুল আমিন এবং নিজাম উদ্দিন।
খালাস পাওয়া সাতজন হলেন এপিবিএনের তিন সদস্য এসআই মো. শাহজাহান আলী, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, কনস্টেবল রাজিব হোসেন, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল ছাফানুল করিম, কনস্টেবল কামাল হোসাইন আজাদ কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। আদালতপাড়ার চারপাশে, পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান নেয় নিরাপত্তাকর্মীরা।
পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা বিভাগের লোকজন কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে। এমন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বেলা ২টার দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে ১৫ আসামিকে কারাগার থেকে কক্সবাজারের জেলা আদালতে আনা হয়। পরে লাইন ধরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় এজলাস কক্ষে, দাঁড় করানো হয় কাঠগড়ায়।
আসামিদের উপস্থিতিতেই বেলা আড়াইটার কিছু আগে এজলাসে বসেন বিচারক। আসামিদের নাম ডাকার পর শুরু করেন ৩০০ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ। প্রায় এক ঘণ্টা সারসংক্ষেপ পড়ার পর ঘোষণা করেন রায়।
এর আগে সকালে মামলাটির রায় ঘোষণার কথা থাকলেও পরে তা পিছিয়ে দুপুরে নেওয়া হয়। রায়ের দিন থাকায় সকাল থেকেই বাড়ানো হয় আদালতের নিরাপত্তা। সকাল ৯টার আগেই আসামিদের কারও কারও আত্মীয়দের দেখা যায় আদালত প্রাঙ্গণে।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত ৯টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। এই হত্যাকাণ্ড দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।