বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী নারী ক্যানে তাকানা। জাপানের একটি নার্সিং হোমে সম্প্রতি পালন করা হয়েছে তার ১১৯তম জন্মদিন।
২০১৯ সালে ক্যানে তাকানার বয়স যখন ১১৬ বছর হয় তখনই তাকে সবচেয়ে বয়সী মানুষের স্বীকৃতি দেয় গিনেস বুক অব রেকর্ডস। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে যখন তিনি ১১৭ বছর ২৬১ দিন অতিবাহিত করেন তখন তাকে জাপানের সব সময়ের সবচেয়ে বয়সী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
ক্যানে তাকানার আশা অন্তত আরো একটি বছর জীবিত থাকা। আর এটি যদি সম্ভব হয় তবে ১২০তম জন্মদিন পালন করবেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে নতুন এক রেকর্ড গড়তে পারবেন এই নারী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান।
ক্যানে তাকানা রোববার সবচেয়ে বেশি বয়সী মানুষের রেকর্ড গড়লেন। তার বসবাস জাপানের ফুকুওকা এলাকায়। সেখানে নার্সদের নিয়ে তিনি গড়লেন সবচেয়ে বেশি বয়সীর রেকর্ড। তার দুর্বলতা ঠাণ্ডা পানীয় এবং চকোলেটের প্রতি।
ক্যানে তাকানার জন্ম ১৯০৩ সালে। ওই বছরে রাইট ব্রাদার্সরা তাদের প্রথম শক্তিচালিত ফ্লাইট উড্ডয়ন করেছিলেন। একই বছর অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম ট্যুর ডি ফ্রান্স। জাপানের পাঁচটি রাজকীয় শাসন দেখেছেন তাকানা। তার পরিবারের সদস্যদের উদ্ধৃত করে কিয়োদো বার্তা সংস্থা বলেছে, তাকানার লক্ষ্য এখন ১২০তম জন্মদিন পালন করা।
জাপানে প্রথম বার্ষিক শুমারি হয় ১৯৬৩ সালে। তখন জাপানে শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫৩ জন। কিন্তু ১৯৯৮ সালের মধ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় কমপক্ষে ১০ হাজার। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রবীণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া দেশের মধ্যে জাপান অন্যতম। সেখানে নারীদের গড় আয়ু রেকর্ড ৮৭.৭৪ বছর। পুরুষদের ৮১.৬৪ বছর। সেখানে প্রবীণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। অন্যদিকে কমছে তরুণ বা যুবসমাজের সংখ্যা। এর কারণ, দেশটিতে জন্মহার অনেক কম।
সরকারি হিসাবে দেখানো হয়েছে, নতুন বছরে নতুন প্রাপ্ত বয়স্কের সংখ্যা ১২ লাখ, যাদের বয়স ২০ বছর পূর্ণ হয়েছে। আগের বছরের চেয়ে এই সংখ্যা ৪০ হাজার কম। ১৯৬৮ সালে প্রথম যখন রেকর্ড রাখা শুরু হয়, তখন থেকে এই সংখ্যা সর্বনিম্ন। সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে’র মতে, গত ১২ বছরে দেশটিতে ২০ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার শতকরা এক ভাগেরও কম।
এমন অবস্থায় তানাকা যখন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ হিসেবে রেকর্ড করলেন, তখন তিনি এই রেকর্ডকে সেলিব্রেট করেছেন তার প্রিয় এক বোতল কোক দিয়ে। ফটো সাংবাদিকদের জন্য শান্তিসূচক চিহ্ন দেখিয়ে পোজ দেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগ ছিল সীমিত। এ সময়ে তিনি পাজল এবং বোর্ড গেম খেলে সময় কাটিয়েছেন।
৯ ভাইবোনের মধ্যে তানাকা সপ্তম। ১৯ বছর বয়সে তার বিয়ে হয়ে যায়। তার স্বামীর ছিল নুডলসের দোকান। তিনি তা চালাতে সহায়তা করতেন। ১৯৩৭ সালে চায়না-জাপানের মধ্যে দ্বিতীয় যুদ্ধে যোগ দেন তার বড়ছেলে। তার প্রপৌত্র ইজি’র বয়স এখন ৬২ বছর। যত দ্রুত সম্ভব তিনি তানাকাকে অভিনন্দন জানাতে চান। তার প্রত্যাশা, তিনি সুস্থ থাকবেন। আর প্রতিদিন আনন্দে থাকবেন।