সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত অজ্ঞাত ২৭ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে গণকবরে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার পরে পোটকাখালী গণকবরে তাদের দাফন করা হয়। এর আগে বেলা ১১টার পরে জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে সার্কিট হাউজ মাঠে অজ্ঞাত ২৭ জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৩৭ জনের বাড়ি বরগুনায়। এই ৩৭ জনের মধ্যে ছয়জনের মরদেহ শনাক্ত করে নিয়ে যায় স্বজনরা। বাকি মরদেহগুলো শনাক্ত করা যায়নি। প্রতিটি মরদেহের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বরগুনা সদর থানায়।
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শনাক্ত করা মরদেহ গুলো – সদরের ৯নং এম বালিয়াতলীর বশির আহমেদ স্বপনের স্ত্রী জাহানারা (৪৫), ২নং গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের দুই কন্যা লামিয়া আক্তার (৪), সামিয়া আক্তার (৪)। তবে রফিকুল এর স্ত্রী শিমু আক্তার নিখোঁজ রয়েছেন। পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী গ্রামের মোস্তফার কন্যা সাহিদা (১৫), একই উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা গ্রামের নাসরুল্লাহর কন্যা তাবাসসুম (৩), ৮নং বরগুনা সদর ইউনিয়নের ঢালুয়া গ্রামের বেল্লালের স্ত্রী মনোরা (৫০)।
২৫টি কফিনে ২৭টি লাশের দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। যার মধ্যে ২টি কফিনে মায়ের সাথে সন্তানকে কবরস্থ করা হয়। অগ্নিদগ্ধে মৃত্যুবরণকারী প্রত্যেককে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
জানাজা শেষে পোটকাখালী জাতীয় কবরস্থানে তিন সারিতে বিশেষ মর্যাদায় তাদের দাফন করা হয়। সার্কিট হাউজ থেকে পোটকাখালী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো বরগুনার মানুষ সমবেদনা জানান।
এই প্রথমবারের মতো গণ জানাজার ইমামতি করেন- বরগুনা কালেক্টর (ডিসি কোর্ট) জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মুফতি জাহিদুল ইসলাম।
ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যার মুঠোফোন নম্বর (০১৭১৬৭০০১৭০)। শনাক্ত ব্যতীত যে লাশগুলো দাফন করা হয়েছে, প্রতিটি লাশের ডিএনএ রাখা হয়।
অজ্ঞাতদের ময়নাতদন্ত শেষে ডিএনএ সংরক্ষণ করেছে ফরেনসিক বিভাগ। পরবর্তীতে যাদের স্বজন নিখোঁজ রয়েছে তাদের ডিএনএ নিয়ে মেলানো হবে। এরপর যাদের সঙ্গে মিলে যাবে তাদের স্বজনরা ইচ্ছে করলে মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যেতে পারবেন।