উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ব্রিটেনের বেলমার্শ কারাগারে স্ট্রোক করেছিলেন। শনিবার রাতে তার বাগদত্তা স্টেলা মরিস সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
স্টেলা মরিস জানান, চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে বেলমার্শ কারাগার থেকে হাইকোর্টে এক শুনানিতে অংশ নেয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।
স্টেলা মরিসের ধারণা, অ্যাসাঞ্জের স্ট্রোক মানসিক চাপের কারণে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন আদালতের পদক্ষেপের কারণে এবং তার স্বাস্থ্য সামগ্রিকভাবে গুরুতর হয়ে পড়ার কারণে স্ট্রোক হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, স্ট্রোক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে প্রভাবিত করেছে। তার চোখ কিছুটা অন্যরকম হয়ে গেছে। তার ডান চোখের পাতা বন্ধ হচ্ছে না এবং স্মৃতিশক্তি কমে গেছে। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের এমআরটি স্ক্যান করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি অ্যান্টি-স্ট্রোক ওষুধ খাচ্ছেন। অ্যাসাঞ্জের ব্যাপারে কোনো রকমের মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে ব্রিটেনের বিচার বিভাগ।
২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন দেশের সরকারের গোপন থাকা তথ্য প্রকাশের প্রচেষ্টা নেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে উইকিলিকস ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিভিন্ন বিপুল গোপন তথ্য হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে তা প্রকাশ করেন।
ওই সময় ইরাকে মার্কিন অ্যাপাচি হেলিকপ্টার থেকে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকসহ ডজনখানেক নিরস্ত্র সাধারণ ইরাকিকে গুলি করে হত্যার ৩৯ মিনিটের এক ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে উইকিলিকস বিপুল পরিচিতি পায়।
২০১০ সালে সুইডেনের দুই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে অ্যাসাঞ্জ প্রথম আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হন। ওই সময়ে সুইডেন ধর্ষণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে অ্যাসাঞ্জকে পাঠানোর জন্য ব্রিটেনের কাছে আবেদন করে।
২০১২ সালে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুইডেনে যাওয়া এড়াতে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনস্থ ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন। ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় বন্দী অবস্থায় তিনি ওই দূতাবাসে কাটান।
২০১৯ সালে ইকুয়েডর সরকার অ্যাসাঞ্জকে দেয়া আশ্রয় প্রত্যাহার করে নিলে ব্রিটেনে দেশটির দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশ পুলিশ।