অবাক করা হিরায় মোড়ানো গাড়ি। যা শুধু চোখ দিয়ে দেখা যাবে কিন্তু ওই গাড়ি একটু স্পর্শ করেও দেখা যাবে না। কারণ, স্পর্শ করলেই গুনতে হবে লাখ টাকা জরিমানা।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদি আরবের যুবরাজ আল-ওয়ালিদ। বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য সারা বিশ্বে জনপ্রিয় তিনি। ওয়ালিদ একজন ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীও। বেইরুটের পাইনউড কলেজে তার পড়াশোনা। তারপর রিয়াধের একটি সেনা স্কুলে ভর্তি হন। তারপর ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো কলেজ থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতক হন। তারপর নিউ ইয়র্কের সাইরাকুস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আল-ওয়ালিদ অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। শুধুমাত্র সৌদি আরবেই তিনটি প্রাসাদ রয়েছে তার। তবে মধ্যে রিয়াধের প্রাসাদেই বেশিরভাগ সময় কাটান তিনি। ওই প্রাসাদে অন্তত ৩১৭টি ঘর রয়েছে। এই বিশাল প্রাসাদ বানাতে খরচ হয়েছিল ১৩ কোটি ডলার। অন্য দেশে ভ্রমণ করতে গেলে ব্যক্তিগত বিমানেই যাতায়াত করেন ওয়ালিদ।
আকাশপথে ভ্রমণের জন্য যেমন ব্যক্তিগত বিমান রয়েছে, জলপথের জন্যও একটি ইয়ট রয়েছে। এটির মূল্য ৫০ কোটি ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। অন্তত ২০০টি বহুমূল্য গাড়ি রয়েছে তার। সেই তালিকায় রয়েছে রোলস রয়েস, ল্যাম্বরগিনি, ফেরারি-র মতো দামি গাড়ি।
তার দীর্ঘ গাড়ির তালিকায় রয়েছে হিরায় মোড়ানো গাড়ি। যা শুধু চোখ দিয়ে দেখা যাবে কিন্তু ওই গাড়ি একটু স্পর্শ করেও দেখা যাবে না। কারণ, স্পর্শ করলেই গুনতে হবে লাখ টাকা জরিমানা। এমন কথা প্রচলিত রয়েছে হিরায় মোড়ানো গাড়িটিকে শুধু ছুঁয়ে দেখতে গেলেই নাকি গুনতে হবে লাখ টাকা! সেটি আসলে একটি মার্সিডিজ গাড়ি। কিন্তু গাড়ির আগাগোড়া হিরের মতো কেলাস দিয়ে মোড়া। অন্তত তিন লাখ কেলাস রয়েছে গাড়িটিতে।
দু’সপ্তাহ ধরে ১৩ জন বিশেষজ্ঞের চেষ্টায় গাড়িটিকে এমন ‘হিরা’ দিয়ে সাজানো সম্ভব হয়েছিল। মার্সিডিজ এসএল৬০০ মডেলের হিরায় মোড়ানো গাড়িটির দাম ৪৮ লাখ ডলার। হিরায় মোড়ানো গাড়িটির বাংলাদেশি টাকায় ৪১ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
২০০৭ সালে দুবাইয়ের একটি প্রদর্শনীতে মার্সিডিজের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে গাড়িটি দেখানো হয়েছিল। তার পরই সেটি কিনে নেন যুবরাজ। পুরোটাই ‘হিরা’ দিয়ে মোড়া থাকায় আলো পড়লেই ঝলমল করে ওঠে ওই গাড়ি।
আলওয়ালিড ফিলানথ্রোপিস নামে একটি সংস্থাও গড়ে তুলেছেন তিনি। যার মূল লক্ষ্য আরবের নারী এবং যুব সমাজকে স্বনির্ভর করে তোলা। এই সংস্থার জন্য তিনি ইতিমধ্যে ৩৫০ কোটি ডলার খরচ করেছেন।