আজ (২৩ জুলাই) সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগেই রুপালি ইলিশের সন্ধানে সমুদ্রে নেমেছেন উপকূলের জেলেরা।
এই সময় দেশের অন্যতম মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর খাপড়াভাঙ্গা নদীর ঘাটে সহস্রাধিক মাছ ধরার ট্রলার থাকার কথা থাকলেও হাতেগোনা কয়েকটি ট্রলার ঘাটে নোঙর করা আছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সমুদ্রে নেমেছে শত শত ট্রলার।
জানা গেছে, এ বছর নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞাকালে অধিকাংশ জেলেরা মাছ ধরায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সমুদ্রে ৬৫ দিনের অবরোধ শুধুমাত্র কাগজেই সীমাবদ্ধ ছিল।
অবরোধকালে কুয়াকাটা, আলীপুর-মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, রাঙ্গাবালী, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সম্রাটসহ উপকূলীয় এলাকার মৎস্য আড়তগুলো ছিল মাছে সরগরম। জেলেদের আহরণকৃত মাছ রীতিমতো খোলা বাজারে বিক্রি, দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাতকরণ সবই চলেছে হাঁকডাকের মধ্য দিয়ে।
মৎস্য অফিস, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, থানা পুলিশ ও নৌবাহিনী রহস্যজনক কারণে নিরব ছিলেন এই সময়ে। মাঝে মধ্যে নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড ভিযান চালিয়ে গত ৬৫ দিনে প্রায় দেড় শতাধিক জেলেকে আটক করে জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেয়। বরফ উৎপাদনেও ব্যস্ত সময় পার করেছেন একাধিক বরফ কল মালিক।
অপরদিকে ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে জেলে পাড়াগুলোতে। অবরোধকালে মৎস্য অধিদপ্তরের দেওয়া ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ ধরতে যাননি এমন জেলেদের সংখ্যাও ছিল চার ভাগের একাংশ। সমুদ্রে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়লেও এসব জেলেরা সরকারের আইন মেনে অবরোধের শেষের দিকে এসে সমুদ্রে নামার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
সমুদ্রে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেরা জানান, সরকার আমাদের ভালোর জন্যই অবরোধ দিয়েছে। যার সুফল আমরা জেলেরাই ভোগ করবো। আর যারা আইন না মেনে সমুদ্রে মাছ ধরেছেন তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে।
তবে জেলেদের অনেকেরই অভিযোগ- আড়তদাররা প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করে সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য নামতে বাধ্য করেছেন জেলেদের। সরকারের আইন বাস্তবায়ন না করে বিশেষ সুবিধা নিয়ে জেলেদের সমুদ্রে নামতে উৎসাহিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
যেসকল জেলেরা অবরোধকালে মাছ ধরেননি তারা ইলিশ ধরার স্বপ্ন নিয়ে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। ২৩ জুলাই রাত ১২টার পর তারা সাগরে যাবেন। ইতোমধ্যে ট্রলার মেরামত, নতুন জাল তৈরি ও পুরোনো জাল সেলাইসহ সমুদ্রে মাছ ধরার সকল প্রস্তুতি শেষ করে অপেক্ষায় আছেন উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার মৎস্যজীবীরা।
জানা গেছে, দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের প্রজনন বাড়াতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরণের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য অধিদপ্তর। শনিবার (২৩ জুলাই) রাত ১২টার পরই মৎস্যজীবীরা নেমে পড়বেন রুপালি ইলিশের সন্ধানে।