এক মার্কিন নাগরিকের আইফোন ফিরিয়ে দিয়ে সততার পরিচয় দেন রিক্সাচালক আমিনুল ইসলাম। তার সততার জন্য তিনি ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পেলেন।
রোববার (২১ আগস্ট) তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
পুরস্কার দেওয়ার আগে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমিনুল যে সততা দেখিয়েছেন, তা একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাই আমিনুলের সততাকে সম্মান জানিয়ে এই ধরনের কাজে অন্যদের উৎসাহিত করতে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট রাজধানীর গুলশানে রিকশার গদির ফাঁকে বন্ধ অবস্থায় আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স পান চালক আমিনুল। পরে ৯ আগস্ট আইফোনটি তিনি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে আমিনুল ইসলামকে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র।
পুরস্কার পাওয়ার পর রোববার গুলশানের নগর ভবনে আমিনুল বলেন, মোবাইলটি রিকশায় পেয়ে হাতে নিয়ে দেখি বন্ধ। মোবাইল বন্ধ থাকায় এর মালিককে ফেরত দেবো কীভাবে। খোলা থাকলে মালিক ফোন দিতে পারে। এই চিন্তা করে রিকশা রেখে মোবাইলটির চার্জার কিনতে যাই। দোকানে চার্জার কিনতে যেয়ে দেখি চার্জারের দাম ৭০০-৮০০ টাকা চায়। দিনে আমার ইনকাম ৫০০-৬০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে চার্জার কীভাবে কিনবো?
তিনি বলেন, চার্জারের দাম বেশি চাওয়ায় মোবাইলটি থেকে সিম খুলে আমার নিজের মোবাইলে ঢুকাই। একদিন পর রাত ১১টার দিকে ওই সিমে ফোন আসে। পরদিন বাড্ডা থানায় গিয়ে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেই নম্বরসহ পুলিশের কাছে আইফোন দিয়ে আসি। মোবাইল পাওয়ার পর একটাই উদ্দেশ্য ছিল যার মোবাইল তাকে ফেরত দিয়ে দেবো। মোবাইলটি ফেরত দিতে পেরে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে।
আমিনুলের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে তিনি থাকেন বাড্ডায়। তাদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। অভাবের কারণে আমিনুল অষ্টম শ্রেণির পর লেখাপড়া করেননি। তবে তিনি কষ্ট করে হলেও তার দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাতে চান। ৮ বছর ধরে গুলশান এলাকায় রিকশা চালান আমিনুল ইসলাম।