“শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই”

0
45
"শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই"

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কদিন ধরে ভাইরাল “শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই”। বিজ্ঞাপনদাতা মোহাম্মদ আলমগীর কবির তার পেশা হিসেবে বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করেছেন “বেকার”।

বগুড়া শহরের জহুরুলনগরের আশেপাশের এলাকায় প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের গণিত ছাড়া সব বিষয় পড়ানোর জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছেন তিনি। শহরের বিভিন্ন দেয়ালে, ইলেকট্রিক খুঁটিতে দেখা যাচ্ছে সাদা এ-ফোর সাইজের কাগজে কালো কালিতে প্রিন্ট করা “শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই” ।

বিজ্ঞাপনে তিনি লিখেছেন, পড়ানোর বিনিময়ে তিনি কোনো অর্থ চান না। কেবল সকাল এবং দুপুর এই দুই বেলা ভাত খাওয়াতে হবে এই হচ্ছে শর্ত।

বিজ্ঞাপনের সাথে নিজের ফোন নাম্বার দিয়েছিলেন তিনি। ওই নাম্বারে ফোন করে জানা যায়, আলমগীর কবির বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স পাস করেছেন।

তিনি বলেন, ‘মূলত খাবারের কষ্ট থেকেই “শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই” বিজ্ঞাপনটি দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘এই মূহুর্তে আমার একটি টিউশনি আছে। সেখানে রাতে পড়াই। তারা আগে নাস্তা দিত। পরে আমি তাদের বলেছি নাস্তার বদলে ভাত খাওয়াতে।’ কিন্তু রাতে খাবারের সংস্থান হলেও সকাল আর দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা ছিল না।

আলমগীর বলেন, ‘আমি টিউশনি করে পাই দেড় হাজার টাকা, সেটা দিয়ে হাতখরচ, খাবার, চাকরির পরীক্ষা দিতে যাওয়া, সব কুলিয়ে উঠতে পারছিলাম না। সেজন্য আমি যেখানে থাকি তার আশোপাশে টিউশনি খুঁজছি যেখানে আমার অন্তত দুইবেলা খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যায়।’

২০২০ সালে মাস্টার্স পাসের পর থেকে চাকরি খুঁজছেন তিনি। কিন্তু এখনো প্রত্যাশামাফিক কোনো চাকরি পাননি।

বিজ্ঞাপন ফেসবুকে ভাইরাল হবার পর সান্ত্বনা দিয়ে অনেকে ফোন করেছেন তাকে। কেউ তাকে তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করতে ডেকেছেন। কিন্তু জয়পুরহাটের পাঁচবিবির বাসিন্দা আলমগীর কবির পোশাক কারখানায় যেতে চান না। কারণ চাকরির ইন্টারভিউ থাকলে তারা ছুটি দিতে চায় না।