সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা তিন ধাপে আয়োজন করা হবে। পর্যাপ্ত পরীক্ষাকেন্দ্র প্রস্তুত করা সম্ভব না হওয়ায় প্রথম ধাপে ২২ এপ্রিল, দ্বিতীয় ধাপে ২০ মে এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ জুন। সে হিসেবে, আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে এক ধাপ এবং ঈদের পরে বাকি দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এ নিয়োগ পরীক্ষা।
নকলমুক্ত ও সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজন সম্পন্ন করতে আগামীকাল মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা প্রথম ধাপে আগামী ২২ এপ্রিল শুরু হবে। এ ধাপে ২২টি জেলার মধ্যে ১৪টির সব উপজেলা এবং ৮টি জেলার কয়েকটি উপজেলা মিলে মোট ৫০৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা আগামী ২০ মে আয়োজন করা হবে। এ ধাপে কতটি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ২৭ মে নির্ধারণ করা হলেও সেদিন বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা থাকায় তা পরিবর্তন করে ৩ জুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতি ধাপের লিখিত পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে সাত দিন আগে প্রার্থীদের অনলাইনে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে সংগ্রহ করতে মোবাইল ফোনে এসএমএস দেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রার্থীর নিজ নিজ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে।
ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ এপ্রিল চাঁপাইনবাগঞ্জ, মাগুরা, শেরপুর, গাজীপুর, নরসসিংদী, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, লালমনিরহাট জেলার সব উপজেলার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, কাজীপুর, যশোর জেলার ঝিকরগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা, ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, ভৈরব, হোসেনপুর, ইটনা, করিমগঞ্জ, কটিয়াদি, টাঙ্গাইল জেলার সদর, ভূয়াপুর, দেলদুয়ার, ধনবাড়ি, ঘাটাইল, গোপালপুর, কুমিল্লা জেলার বরুয়া, ব্রাক্ষণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, সদর, মেঘনা, দাউদকান্দি এবং নোয়াখালী জেলার কবিরহাট, সদর, সেনবাগ, সোনাইমড়ি, সুবর্ণচর উপজেলার প্রার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম সোমবার দুপুরে গনমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা জেলায় জেলায় ভাগ করে তিন ধাপে নেওয়া হবে। পর্যাপ্ত পরীক্ষাকেন্দ্র না থাকায় তিন ধাপে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে।
তিনি বলেন, সার্বিক প্রস্তুতি নিতে আগামীকাল আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্টদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হবে। কোন মন্ত্রণালয় কীভাবে সহযোগিতা করবে আলাপ-আলোচনা করে তা চূড়ান্ত করা হবে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ চাওয়া হবে।
সচিব আরও বলেন, আমরা দ্রুত সময়ে পরীক্ষা শেষ করতে চাই। যেহেতু বিপুল পরিমাণ শিক্ষকপদ এখনো শূন্য, ফলে প্রাথমিকে জনবল নিয়োগ দেওয়াটাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।
এ পরীক্ষার মাধ্যমে ২৬ হাজার বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকের বাইরে সর্বশেষ শিক্ষকপদ শূন্য হওয়া সব বিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগ করা হবে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ডিপিই সূত্র জানিয়েছিল, সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা জেলা পর্যায়েই নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের ৬১ জেলায় এ পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। শিগগির পরীক্ষার নতুন তারিখ নির্ধারণ করে নির্দেশনা জারি হতে পারে। বর্তমানে কেন্দ্র নির্বাচনের কাজ চলছে।