বিদেশে থাকা মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আল-কায়দা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যার ফলে সংগঠনটি মার্কিনিদের টার্গেট করে হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাওয়াহিরির মৃত্যু আল-কায়দা সমর্থক এবং সংশ্লিষ্ট অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে মার্কিন ঘাটি ও সেনাদের টার্গেট করে হামলায় উৎসাহিত করতে পারে।
বিবিসির খবরে জানানো হয়, রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে মার্কিন ড্রোন হামলায় ৭১ বছর বয়স্ক জাওয়াহিরি নিহত হন। পরদিন সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জাওয়াহিরিকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে আল-কায়েদার সন্ত্রাসী হামলায় জাওয়াহিরির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়। এ হামলায় তিন হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। এছাড়া ১৯৯৮ সালে কেনিয়া ও তানজানিয়ায় মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলায় ভূমিকার জন্যও জাওয়াহিরিকে অভিযুক্ত করা হয়। এতে ২২৩ জন নিহত হয়েছিলেন। ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা জাওয়াহিরির মাথার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর আল-কায়েদার প্রধান হন জাওয়াহিরি। তার আগে তিনি আল-কায়েদার মূল সংগঠক ও কৌশল নির্ধারণকারী ছিলেন।
বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেন, ৩১শে জুলাই জাওয়াহিরিকে হত্যার পর বিশ্বজুড়ে মার্কিনবিরোধী সহিংসতা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে থাকা মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আত্মঘাতী হামলা, গুপ্তহত্যা, অপহরণ, ছিনতাই কিংবা বোমা হামলার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই মার্কিন নাগরিকদের উচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে দারুণ ধারণা নেয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
আল-কায়দা একসময় অল্প কিছু এলাকায় কার্যক্রম চালালেও এখন তারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত যেসব দেশে আইনের শাসন অনুপস্থিত সেসব দেশকে আস্তানা গড়তে কাজে লাগাচ্ছে জঙ্গি সংগঠনটি। সোমালিয়ায় ভয়ংকর হয়ে উঠেছে জিহাদি দল আল-শাবাব, যা আল-কায়দারই একটি অংশ। আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশগুলো জিহাদিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। আল-কায়দার পাশাপাশি, ইসলামিক স্টেটও সেখানে ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।