মঞ্চের বিকল্প হয়ে উঠছে ডিজিটাল প্ল্যাটফরম!

0
26
মঞ্চ আয়োজন
মঞ্চ আয়োজন

ঢাকার মঞ্চগুলো আবার কবে চালু হবে তার ঠিক নেই। সিনেমা হলগুলোও বন্ধ। ফলে মানুষের বিনোদনের একমাত্র জায়গা এখন টিভি ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম। এসবের বাইরে মানুষের কাছে সাংস্কৃতিক আয়োজনের বিকল্প প্ল্যাটফরম হয়ে উঠেছে অনলাইন অনুষ্ঠান আয়োজন।

বিভিন্ন সংগঠন তাদের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলে কিংবা জুম অ্যাপে আয়োজন করছে নানা অনুষ্ঠান। যেখানে শ্রোতা-দর্শকরা লাইভ অনুষ্ঠানের স্বাদ পাচ্ছেন।

করোনা মহামারিতে সাংস্কৃতিক আয়োজন একেবারেই বন্ধ। ঢাকার সব মঞ্চ সুনসান, ফাঁকা। এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফরমই হয়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক আয়োজনের একমাত্র ক্ষেত্র। যেকোনো বিশেষ দিন কিংবা উত্সবে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমেই অনুষ্ঠানের আয়োজন হতে দেখা যাচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ সংগঠনেরই করোনাকালে তেমন কোনো আয়োজন নেই।

তবে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছে। করোনাকালে তারাই ঘরবন্দি মানুষের জীবনে দিচ্ছেন শিল্প-সংস্কৃতির স্পর্শ। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বলছেন, দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান ভিন্নমাত্রা পায়। দর্শকের অনুভূতি স্পর্শ করে মঞ্চের শিল্পীকে।

ডিজিটাল প্ল্যাটফরমেও শ্রোতা-দর্শকের তাত্ক্ষণিক অনুভূতি পাওয়া যায়। এতে দর্শকের শারীরিক উপস্থিতি থাকে না কিন্তু তার অনলাইন উপস্থিতি থাকে। এটা একটা ভিন্ন জগত্। নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করলে অনলাইন প্লাটফরমেও দেশ-বিদেশের বিশাল দর্শকগোষ্ঠী পাওয়া যায়। যাদের অনেকেই হয়তো মঞ্চের অনুষ্ঠানে আসতে পারেন না।

গত বছর স্বাধীনতা দিবস থেকেই খোলা স্থানে কিংবা মঞ্চে নাটক প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। মাঝে কিছু সময়ের জন্য উন্মুক্ত হলেও করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়। এসব বাধার মধ্যে কিছু কিছু সংগঠন ঠিকই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছে। শিল্পকলা একাডেমি নিয়মিতভাবেই বিষয়ভিত্তিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।

সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, ছায়ানট, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী প্রায় নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এছাড়া করোনাকালীন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভার্চুয়াল প্রদর্শনীর আয়োজনও করেছে কিছু শিল্প গ্যালারি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তরার গ্যালারি কায়া, গ্যালারি শিল্পাঙ্গন প্রভৃতি।

দেখা যাচ্ছে, দেশের সংস্কৃতি অঙ্গন তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়ায় হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত। এসব অনুষ্ঠান ঘরবন্দি মানুষের একঘেয়ে জীবনকে রঙিন করে তুলছে। ঢাকার মঞ্চগুলো সুনসান পড়ে থাকলেও ডিজিটাল প্ল্যাটফরম বেশ রমরমা। ফলে সংস্কৃতি অঙ্গনেও তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব পড়েছে। মানুষ ঘরে বসেই উপভোগ করছেন অনুষ্ঠান।

এদিকে দেশে ও দেশের বাইরে থেকেও বিভিন্ন সংগঠন প্রায় নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। যেমন রবীশঙ্কর মৈত্রী ফ্রান্স থেকে করেন ‘সহজ মানুষ’ শিরোনামে অনুষ্ঠান। ফ্রান্স থেকে কিরণময় মন্ডল আয়োজন করেন ‘অনন্তধ্বনি’, ঢাকা থেকে অসীম বাইন ‘সোনারতরী’ নামে নিয়মিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন, বন্যা হালদার আয়োজন করেন ‘আমার গান’, দিরাই থেকে ‘কুটুমুপাখি’ নামে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, মকবুল হোসেন করেন ‘সংস্কৃতি’ নামে অনুষ্ঠান।

এছাড়া দেশে-বিদেশে বেশকিছু কবিতা উত্সবের আয়োজনও সুনাম কুড়িয়েছে। ‘প্যারিসের জানালা আন্তর্জাতিক বাংলা কবিতা উত্সব’ বাংলা ভাষার কবিদের মিলনমেলা হয়ে উঠেছিল।