আমের রাজধানী হিসাবে খ্যাত রাজশাহী জেলার বাঘায় ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর আম বাগান রয়েছে। প্রায় দেড় শতাধিক জাতের আমের এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দেড় লাখ মেট্রিক টন। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
বাঘা উপজেলার বিভিন্ন বাগানে এখন আমের মুকুলের মৌ-মৌ গন্ধ। আবার কোন-কোন গাছে ক্ষুদ্র পরিসরে গুটি ধরা শুরু হয়েছে। ফলে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়রা জানান, বাঘায় আমকে ঘিরে প্রতি মৌসুমে অন্তত ২৫টি ছোট-বড় আমের বাজার (হাট) বসে। এরমধ্যে বড় বাজার বসে বাঘা সদর, মনিগ্রাম, বিনোদপুর, বাউসা, আড়ানী ও পাকুড়িয়া এলাকায়।
এ অঞ্চলের আমের মধ্যে-ফজলি, ক্ষীরশাপাত, গোপাল ভোগ ও ল্যাংড়ার নাম শোনা যায় সবার মুখে-মুখে। এছাড়াও বৌ-ভুলানি, রানীপছন্দ, জামাইখুসি, বৃন্দাবন, লকনা, বোম্বাই খিরসা, মোহনভোগ, সেনরই, আম্রপালি, আশ্বিনা, ক্ষুদি খিরসা, বৃন্দাবনী, ও কালীভোগ-সহ প্রায় দেড়’শ জাতের আম রয়েছে। প্রতিবছর আম মৌসুমে এ উপজেলায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়।
বাগান মালিকরা জানান, প্রতি বছর মাঘের শুরুতে আম গাছের ডালে ডালে মুকুল ফুটতে শুরু করে। কিন্তু এবার পৌষে মুকুল চলে এসেছ। এ দিক থেকে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা মুকুলের পরিচর্যা শুরু করেছেন। গাছে-গাছে যে পরিমাণ মুকুল আসে, তার সিকিভাগ (২৫%) টিকে গেলেও আমের বাম্পার ফলন হবে।
বাঘার আমোদপুর গ্রামের সফল আম চাষি আলী আকবর জানান, গাছে মুকুল আসার পর থেকে আম পাড়া পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। তাতে হেক্টরে ৩৮ থেকে ৪৫ হাজার টাকার বালাইনাশক লাগে। সে হিসেবে বাঘায় ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর জমির আমগাছে বছরে প্রায় ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৭২০ টাকার কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার হয়ে থাকে। যার কমতি হবেনা এবারও ।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ্ সুলতান বলেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে এর উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি সঠিক ভাবে সংরক্ষণ এবং পরিবহন, রপ্তানি-সহ বাজারজাত করলে কৃষকরা ব্যাপক হারে লাভবান হবেন। তিনি উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণা-বেক্ষণের জন্য কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়ার ফলে গত তিন বছর থেকে বাঘার আম বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।