বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে

0
43
এখন উপায় একটাই, এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং
এখন উপায় একটাই, এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং

সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমি বন্যা কবলিত এলাকায় জনসাধারণকে আশ্বাস দিতে চাই, সরকার আপনাদের পাশে আছে। মানুষের ভোগান্তি লাঘবে আমরা সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিয়েছি।

বুধবার (২২ জুন) সকাল ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে সিলেটে যে বন্যা হয়েছে তা অকল্পনীয়। এটাকে প্রলয়কঙ্করী বললেও ঠিক বুঝানো যায় না। সিলেট বিভাগের উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসামে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে তিন দিনে ২ হাজার ৫০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টাতেও ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়, যা ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বন্যা নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নাই

তিনি আরও বলেন, মেঘালয় ও আসাম পাহাড়ি এলাকা। ফলে বৃষ্টির পানি দ্রুত ভাটির দিকে সমতল ভূমি সিলেট-সুনামগঞ্জে প্রবেশ করে প্লাবিত করেছে। এ অঞ্চলের হাওর ও নদীগুলোর স্বাভাবিক বন্যার পানি ধারণের ক্ষমতা আছে। কিন্তু এত বিপুল পরিমাণ পানি ধারণ ও পরিবহনের ক্ষমতা এসব হাওর বা নদীগুলোর নেই। ফলে পানি ফুলে-ফেঁপে উঠে গ্রাম, শহর, নগর, সড়ক-মহাসড়ক প্লাবিত করেছে। এবারের বন্যা স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহতম। বিগত একশ-সোয়াশ বছরের মধ্যে প্রলয়ঙ্করী বন্যা এ এলাকায় হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানোর ক্ষমতা মানুষের নেই, সরকারেও নেই। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। সরকার সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে কি না, সেটিই বিবেচ্য বিষয়।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ১৭ ও ১৯ পদাতিক বিভাগ ১১ হাজার ৩৮০ পরিবারকে উদ্ধার করেছে, ২৩ হাজার ৪৪৬ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে এবং ১০ হাজার ৩১৪ পরিবারকে চিকিৎসা দিয়েছে।

একই সময়ে নৌবাহিনীর ৬ কর্মকর্তা ও ১০০ ডুবুরি ২০০টি পরিবারকে উদ্ধার করেছে, ৮০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে, ৩০ পরিবারকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। এছাড়া বিজিবি’র ৭০ কর্মকর্তা ও ১ হাজার ৫৫০ জওয়ান ১ হাজার ২৫০টি পরিবারকে উদ্ধার করেছে, ৪ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে এবং ৫০০ পরিবারকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। আর কোস্ট গার্ডের ৪ কর্মকর্তা ও ৭৬ নাবিক ১০০ পরিবারকে উদ্ধার করেছে, ৬০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে এবং ৩০ পরিবারকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিভিন্ন বাহিনীর শতাধিক বোট, হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য যানবাহন উদ্ধারকাজে নিয়োজিত আছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৫০০ সদস্য সাতটি হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমানসহ সিলেট এলাকায় উদ্ধারকাজ পরিচালনা ও ত্রাণ বিতরণের জন্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের দুর্গত মানুষদের দেওয়া হয়েছে। তারা দুর্গত এলাকায় প্রাণ কাজ চালাচ্ছে।