জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ পরিষদের অংশগ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
- বাংলাদেশ বিমানের এয়ারক্রাফট ব্যবহার করে সফর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার আমি যে বিমানে গেছি, সেটি ড্রিমলাইনার; সবচেয়ে আধুনিক যাত্রীবাহী বিমান। বেশ অল্প টাকায় আমরা কিনতে পেরেছি। এটার নামও আমি দিয়েছি; অচিন পাখি। এই বিমানে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো- সরকারে আসার পর বহু চেষ্টার পর অনেকগুলো বিমান একসঙ্গে করেছি।
- ব্রিটিশ এমপি ও বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ হামলার বিষয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেতো শুধু বঙ্গবন্ধুর নাতনি নয়, ব্রিটিশ এমপি। যেহেতু ঘটনা সেখানকার তারাই (ব্রিটিশ সরকার) দেখবে। এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটায় তাদের ব্যপারে মানুষই বলুক, তারা কী ধরনের মানুষ! ইংল্যান্ডের মতো সভ্য দেশে এ রকম অসভ্য ঘটনা, এটা ব্যাপারে কী বলবো? ওখানে তো কিছু লোক আছে সারাক্ষণ বিরুদ্ধে লেগে থাকার জন্য। এগুলো দুঃখজনক। গাড়ি ভাংচুর অত্যন্ত জঘন্য কাজ। আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না।
- গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তির জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু এটা নিয়ে কথা ওঠেছে। ডিজিটাল যুগে কথা তো নানাভাবে কীভাবে কে প্রচার করেছে, কীভাবে কী হয়েছে? এটা জানার জন্য পার্টি থেকে তাকে শোকজ করা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর পার্টি বসবে। পার্টি সিদ্ধান্ত নেবে।
- রোহিঙ্গা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটি গোষ্ঠীর অসন্তোষের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সব কিছুই যেন একটি ব্যবসা। কেউ কেউ মনে হয় সুবিধা পাচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার জন্য এটা এক ধরনের ব্যবসা। এরা (রোহিঙ্গারা) না থাকলে তাদের চাকরি যাবে।
তিনি বলেন, আমরা আরও এক বিশাল রিফিউজি লালন-পালন করে আসছি। সেটা হলো- পাকিস্তানের রিফিউজি। তাদের নেয়নি, নেবেও না। আমার মনে হয়, রিফিউজি পালা যেনো অনেকের ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিফিউজি না থাকলে মনে হয়, তাদের চাকরিই থাকবে না। এটা কোনো সংস্থার জন্য।
- ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক প্রতারণার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাংবাদিকদের শ্যেন দৃষ্টি থাকে। যখন এসব ‘হায় হায় কোম্পানি’ তৈরি হয়, তখন আপনাদের সেই দৃষ্টি থাকলে এবং আপনারা (গণমাধ্যম) জনগণকে একটু সচেতন করলে মানুষ আর বিপদে পড়ে না।
সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের দুঃসময়ে কিছু প্রতারক তাদের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে। যখন এসব ‘হায় হায় কোম্পানি’ তৈরি হয়, আপনারা (গণমাধ্যম) একটু সচেতন করলে মানুষ আর বিপদে পড়ে না। আমরা চেষ্টা করবো তাদের (প্রতারিতদের) টাকা হাতে পৌঁছে দিতে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- মানুষের কল্যাণে সাংবাদিকতাকে কাজে লাগাতে এ পেশার কর্মীদের গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এই গবেষণার জন্য অর্থ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারাও গবেষণা করেন। কীভাবে সাংবাদিকতাটা মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানো যায়, মানুষ আরও বেশি উপকৃত হতে পারে, তার গবেষণা করুন। এসময় প্রধানমন্ত্রী তার তহবিল থেকে এই গবেষণার জন্য অর্থ দেওয়া হবে বলে জানান।
সাংবাদিকদের টাকা কল্যাণ ট্রাস্টে চলে গেছে, ট্রাস্ট যার প্রয়োজন তাকে দেবে বলেও এক প্রশ্নের জবাবে জানান প্রধানমন্ত্রী।