প্রতিদিনই উঠে আসছে আরিয়ানকাণ্ডে নতুন রহস্য

0
48
প্রতিদিনই উঠে আসছে আরিয়ানকাণ্ডে নতুন রহস্য
প্রতিদিনই উঠে আসছে আরিয়ানকাণ্ডে নতুন রহস্য

প্রতিদিনই উঠে আসছে আরিয়ানকাণ্ডে নতুন রহস্য। আরিয়ান গ্রেপ্তারের পর এনিসিবির সাক্ষী প্রভাকর সেইল সংবাদমাধ্যমে বলেন, আরিয়ানকে ছাড়াতে শাহরুখ খানের কাছ থেকে ১৮ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা ইতিমধ্যেই দিয়েছিলেন শাহরুখ খানের ম্যানেজার পুজা দাদলা।

টাকা আদায়ের ঘটনায় কিরণ গোসাভি ও স্যাম ডি’সুজা নামক যে দু’জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, এ বার তাদের মধ্যেই মুখ খুললেন একজন। মাদককাণ্ডে আরিয়ান গ্রেপ্তারের পর পরই এনসিবির সাক্ষী প্রভাকর সেইল এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিলেন। তিনি বলেন, সমীর ওখাংড়ে তাকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছিলেন।

প্রভাকর সেইলকে যে মাদক মামলায় সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হবে, সে বিষয়ে তিনি জানতেনই না। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এনসিবির হেফাজত থেকে আরিয়ান খানকে মুক্তি দিতে শাহরুখ খানের ম্যানেজার পূজা দাদলানির কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। পরে তা ১৮ কোটি টাকায় রফা হয়। এরমধ্যে ৮ কোটি টাকাই এনসিবির জ়োনাল অফিসার সমীর ওখাংডেকে দেওয়ার কথা ছিল।

শাহরুখের ম্যানেজার পূজা দাদলানির কাছ থেকে টাকা আদায়ের কাজ করছিলেন কিরণ গোসাভি নামক এক ব্যক্তি। প্রভাকর সেইল তারই দেহরক্ষী ছিলেন। কিরণ গোসাভির সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করছিলেন স্যাম ডি’সুজা নামক অপর এক ব্যক্তি। তিনিই গোসাভি ও পূজা দাদলানির মধ্যে দেখা করিয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন প্রভাকর সেইল।

রোববার (১৪ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে স্যাম ডি’সুজা বলেন, তিনি ২৫ কোটি টাকার চুক্তি সম্পর্কে প্রথমে কিছুই জানতেন না। তিনি শুধুমাত্র শাহরুখ খানের ম্যানেজার পূজা দাদলানির সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, এই দীর্ঘ সময় ধরে তিনি দিল্লিতে ছিলেন এবং শীঘ্রই এনসিবির তদন্তকারী দলের কাছে হাজিরা দিয়ে নিজের বয়ান দেবেন।

স্যাম ডিসুজার দাবি, তিনি আগে থেকে কিরণ গোসাভির সঙ্গে পরিচয় ছিলো না। ২৫ কোটির চুক্তির বিষয়েও কিছু জানা ছিল না। গত ১ অক্টোবর সুনীল পাটিল নামক এক ব্য়ক্তির সাহায্যে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কিরণ গোসাভি।

স্যাম ডি’সুজা বলেন, ‘৩ অক্টোবর গোসাভির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আমি জানতে চেয়েছিলাম, কী চায় সে। কিরণ গোসাভি আমায় বলেছিল, আরিয়ান খান গ্রেপ্তার হয়েছে এবং সে শাহরুখ খানের ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করতে চায়। আমি বলেছিলাম, আমার কাছে পূজা দাদলানির নাম্বার নেই, তবুও আমি যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। শেষ অবধি আমি পূজা দাদলানির নাম্বার জোগাড় করতে পারিনি।’

তার আরও দাবি, ‘পরে গোসাভি আবারও আমার কাছে আসে এবং জানায়, আরিয়ান খানের কাছে মাদক পাওয়া যায়নি। আমরা তাকে জেল থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারি। এরপর আমি পূজা দাদলানির ফোন নাম্বার জোগাড় করি। যখন গোসাভির সঙ্গে পূজার মুখোমুখি দেখা হয়, তখনও আমি উপস্থিত ছিলাম। গোসাভি নিজেকে তদন্তকারী অফিসার বলে দাবি করেছিল। আমি ওর আসল পরিচয় জানতাম না, তাই আমিও স্যার বলেই সম্বোধন করছিলাম।’

স্যাম ডি’সুজার দাবি, কিরণ গোসাভি একাধিক মিথ্যা কথা বলেছে। নিজের দেহরক্ষী প্রভাকর সেইলের নাম্বারও সে ফোনে সমীর ওখাংড়ে নামে সেভ করেছিল সকলকে ভুল পথে চালিত করতে। নিজের গাড়িতে এনসিবির স্টিকারও লাগিয়েছিল গোসাভি, এমনটাই দাবি স্যামের।

আরিয়ান খানের গ্রেপ্তারির পর সুনীল পাটিলের মাধ্যমে যখন জানতে পেরেছিলেন পূজা দাদলানির কাছ থেকে কিরণ গোসাভি ৫০ লাখ টাকা নিয়েছে, তখন চমকে গিয়েছিলেন বলেই দাবি করেন স্যাম ডি’সুজা। পরে কিরণ গোসাভির সঙ্গে আরিয়ান খানের ছবিও ভাইরাল হয়।
সুনিল পাটিলই তাকে টাকা জোগাড় করতে বলেছিলেন পূজা দাদলানিকে ফেরত দেওয়ার জন্য। স্যাম ডি’সুজা বলেন, ‘কিরণ গোসাভি, প্রভাকর সেইল, সুনীল পাচিল, সকলেই জালিয়াত। ধীরে ধীরে সব সত্যি সামনে আসবে।’ প্রাণহানির ভয়ে তিনি মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছ থেকে নিরাপত্তা দাবি করেছেন বলেও জানা যায়।