পেট্রোলপাম্প বন্ধঃ ৩১ আগস্ট ভোর থেকে বেলা ১১টা

0
67
পেট্রোলপাম্প বন্ধঃ ৩১ আগস্ট ভোর থেকে বেলা ১১টা
পেট্রোলপাম্প বন্ধঃ ৩১ আগস্ট ভোর থেকে বেলা ১১টা

জ্বালানি তেল বিক্রিতে কমিশন বাড়ানো, বিপিসির অংশগ্রহণ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউশন, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী ৩১ আগস্ট ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশের পেট্রোলপাম্প বন্ধ রাখবে সংগঠনটি।

আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোঃ নাজমুল হক।

তিনি বলেন, কমিশন বাড়ানোর জন্য বারবার দাবি জানিয়ে আসছি। ২০১৩ সালে আমাদের তেল বিক্রিতে কমিশন অকটেন ও পেট্রোলে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও ডিজেলে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ নির্ধারিত ছিল। আমরা ২০১৬ সাল থেকে ৭ শতাংশ কমিশন করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সেটা না করে শতাংশের বদলে পয়সার হিসাব নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে শতাংশের পরিমাণ কমে পেট্রোল-অকটেনে তিন দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ডিজেলে দুই দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়ে গেছে।

পেট্রোলপাম্পে অনিয়মের অভিযোগে ঢালাওভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে দাবি করেন অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি। বলেন, ‘অভিযানে বিপিসির একজন প্রতিনিধি রাখার কথা থাকলেও তাদের না নিয়ে শুধু মাজিস্ট্রেট গিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এটা পাম্প মালিকদের ওপর জুলুম।’

সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে নাজমুল হক বলেন, ‘আমাদের দাবি ও সাত শতাংশ কমিশনের সরকারের আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।’

তাদের পাঁচ দফা দাবি আগামী সাত দিনের মধ্যে পূরণ না হলে ৩১ আগস্ট ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সারা দেশে পেট্রলপাম্প বন্ধ রাখা হবে বলে জানান মোহাম্মদ নাজমুল হক।

পাঁচ দাবি হলো –

১. জ্বালানি মন্ত্রণালয়, বিপিসি ও অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের মাঝে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তেল বিক্রির কমিশন তেলের মূল্যের ওপর শতকরা হার ভিত্তিতে করতে হবে।

২. তেলের পরিমাপে কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিং বা অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপিসি বা বিপণন কোম্পানি প্রতিনিধি ছাড়া ভোক্তা অধিদফতর, বিএসটিআইয়ের অভিযান এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিংয়ের জন্য অনতিবিলম্বে তেল কোম্পানি, বিএসটিআই এবং অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং সেলের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

৩. বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো দফতর বা প্রতিষ্ঠান পাম্পের কাগজপত্র চেক করার নামে পাম্প মালিকদের হয়রানি করতে পারবে না। পাম্প পরিদর্শনকালে সঠিক ও ভুল উভয় তথ্য লিপিবদ্ধ এবং প্রচার করতে হবে। তার কপি মালিককে সরবরাহ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৪. সওজ (সড়ক ও জনপথ) অধিদফতরের ইজারা মাশুল যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করতে হবে। বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং বিএসটিআই ও অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত যৌথ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাম্পের আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিবারেশন (যার সঙ্গে ভোক্তার কোনো স্বার্থ জড়িত নেই) সার্টিফিকেট নবায়ন প্রথা বাতিল করতে হবে।

৫. জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাস্তায় ট্যাংক লরির কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে ট্যাংকলরির চালককে পুলিশের হয়রানি করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ট্যাংকলরির কাগজপত্র ডিপোর গেটে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সব ডিপোতে পার্কিং স্ট্যান্ড নির্মাণ করতে হবে। ট্যাংকলরির চালকদের জন্য বিআরটিএ কর্তৃক আলাদা কাউন্টার করার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। শোধনাগার সুবিধা সমন্বিত বিভিন্ন গ্যাসফিল্ডের শোধনাগার আগের মতো চালু করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব জুবায়ের আহমেদ চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।