কীংবদন্তি সন্তুরবাদক পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা আর নেই। আজ মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
মৃত্যুকালে তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী মনোরমা এবং ছেলে রাহুল শর্মাকে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা ছয় মাস ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর ডায়ালাইসিস চলছিল।
উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে ‘সন্তুর’ নামে বাদ্যযন্ত্রটির আগে তেমন মর্যাদা ছিল না। সেই যন্ত্রকে শাস্ত্রীয় সংগীতের মূল ধারায় এনেছিলেন শিবকুমার। হরিপ্রসাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে শিবকুমার বলিউডের মূল ধারার ছবিতে কালজয়ী সুরসৃষ্টি করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম ‘সিলসিলা’। শিবকুমারের ছেলে রাহুলও বাবার মতো সন্তুরবাদক হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।
এ শিল্পীর মৃত্যুতে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন। শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অনেকে।
নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক জগৎ রিক্ত হলো পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার প্রয়াণে। “সন্তুর” যন্ত্রটিকে তিনি বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করেছেন।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার প্রয়াণে গভীরভাবে শোক প্রকাশ করছি। তিনি শুধু যে বিখ্যাত সন্তুরবাদক ছিলেন তা-ই নয়, বহু ভারতীয় চলচ্চিত্রে সুরও করেছেন তিনি।’
শোক প্রকাশ করে ওস্তাদ আমজাদ আলী খান লিখেছেন, ‘পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার প্রয়াণ একটি যুগাবসান। তিনি সন্তুর যন্ত্রটির অগ্রণী শিল্পী। আমার কাছে অবশ্য এটা ব্যক্তিগত শোকের মুহূর্ত। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি। তাঁর সংগীত বাজতে থাকুক আমাদের হৃদয়ে।’
১৯৩৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জম্মুর একটি সম্ভ্রান্ত সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। তার বাবা উমা দত্তশর্মা ছিলেন প্রথিতযশা সঙ্গীত শিল্পী। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকেই শিবকুমার তার বাবার কাছ থেকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন।
সংগীত নাটক একাডেমি-সহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বহু পুরস্কার পেয়েছেন শিবকুমার। ২০০১ সালে পান পদ্মবিভূষণ। এ ছাড়াও আমেরিকার সম্মাননীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় তাকে।
