নোংরা পানি বোতলজাত করে বিক্রি

0
33
নোংরা পানি বোতলজাত

পরিশোধন না করেই নোংরা এবং জীবাণুযুক্ত বোতলজাত পানি বিক্রি করছে নানা প্রতিষ্ঠান। এদের বেশিরভাগেরই বিশুদ্ধ খাবার পানি উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান উৎপাদনের যন্ত্রপাতি থাকলেও তারা পানি যথাযথভাবে পরিশোধন না করেই নোংরা ও নন-ফুড গ্রেড জারে ভরে খাবার পানি হিসেবে বিক্রি করছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব মো. আবদুল হালিম কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে তিনি আরও দাবি করেন, এই অপরাধে অনেকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে সংসদীয় কমিটি মিনারেল ওয়াটার বা বোতলজাত পানি উৎপাদনকারী কারখানাগুলো সঠিকভাবে বিশুদ্ধ পানি বোতলজাত না করলে তাদের কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করে। এছাড়া লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলে।

এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন চায় সংসদীয় কমিটি। এর প্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব মো. আবদুল হালিম জানান, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কর্তৃক সার্ভিল্যান্স টিম গঠনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লাইসেন্সপ্রাপ্ত মোট ৬৩টি ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনকারী কারখানা পরিদর্শন করা হয়। এর মধ্যে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানের বিশুদ্ধ ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। অবশিষ্ট ২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিশুদ্ধ ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের যন্ত্রপাতি থাকলেও তারা পানি যথাযথভাবে পরিশোধন না করেই নোংরা ও নন-ফুড গ্রেড জারে ভরে ড্রিংকিং ওয়াটার হিসেবে বিক্রি/বিতরণ করছে। এজন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সচিব জানান, এর মধ্যে ইকো ড্রিংকিং ওয়াটার বিএসটিআইয়ের নির্দেশ অমান্য করে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত অব্যাহত রাখায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারখানাটি সিলগালা করা হয়। এছাড়া ১১টি প্রতিষ্ঠানের পানি বিশুদ্ধকরণের সক্ষমতা রয়েছে, তবে পরীক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেছে। এসব ক্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন করে বিএসটিআইকে অবহিত করার জন্য উৎপাদনকারীকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ত্রুটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়/বিতরণ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জবাবে বৈঠকে কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমু বলেন, বিএসটিআইয়ের সব কার্যক্রম মিডিয়ায় এবং প্রেসে দেওয়ার জন্য বলা ছিল। এটা যেন যথাযথভাবে পালন করা হয়। সময় সময় জনগণকে জানাতে হবে।

কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, একেএম ফজলুল হক, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ এবং মো. শফিউল ইসলাম বৈঠকে অংশ নেন।