
ডিজিটাল সংযোগ শিখতে দেশে ও বিদেশে ২০ হাজার ১৯৬ জনের প্রশিক্ষণ প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে চীনে যাবেন ৪০ জন আর বাকি ২০ হাজার ১৫৬ জন দেশেই প্রশিক্ষণ নেবেন। এ খাতে ব্যয় হবে ৫৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এসব প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়। তবে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব ছিল আরও বেশি। পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তিতে তা কমানো হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৫০৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং চীন সরকারের ঋণ থেকে ৩ হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। এ প্রসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিকর্ণ কুমার ঘোষ বুধবার জানান, আমাদের আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে এ প্রকল্পে কম প্রশিক্ষণ ধরা হয়েছে। কেননা এখনও আইসিটি খাতে পর্যাপ্ত এক্সপার্ট তৈরি হয়নি।
এছাড়া এখন যেসব প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, সেগুলো হবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে সামনে রেখে। সাধারণ বেসিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে না। করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? এ বিষয়ে জনতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হবে। যাতে তারা ফিরে এসে দেশে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এটার প্রয়োজন আছে। দেশে থেকে এ ধরনের প্রশিক্ষণ নেয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে সব কিছুই আইটি নির্ভর হবে। যেমন পোশাক খাতে যদি শ্রমিকদের আইটি বিষয়ে দক্ষতা তৈরি করা না যায় তাহলে আগামীতে অনেকেই বেকার হতে পারেন। তাই প্রশিক্ষণ লাগবেই।
বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক প্রশিক্ষণ যেন শুধু বিদেশ ভ্রমণ না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। অর্থাৎ যারা বিদেশ যাবেন তারা যেন ফিরে এসে অন্যকে প্রশিক্ষণ দেয়ার যোগ্য হন। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই বাছাই করতে হবে। তবে এ ধরনের প্রকল্পে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এসব প্রশিক্ষণ যেন বাস্তবভিত্তিক এবং কার্যকর প্রশিক্ষণ হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন, ব্রডব্যান্ড অ্যান্ড ইউজার কানেকটিভি স্থাপন, বিশেষায়িত ল্যাব, সেন্ট্রাল ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম এবং ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি সেন্টার অব এক্সিলেন্ট স্থাপন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমপ্লেক্স ও আইটি অবকাঠামোসহ ডিজিটাল ভিলেজ স্থাপন এবং ২১ তলা বিশিষ্ট আইসিটি টাওয়ারসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
ইতোমধ্যেই প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) যে কোনো বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি নিয়ে গত বছরের ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় বলা হয়েছিল, প্রকল্পে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের স্বার্থে প্রশিক্ষণের সংখ্যা নিড বেইজ করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা ও সে অনুযায়ী যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ শতভাগ ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশন রেট নিশ্চিত করতে সারা দেশে প্রান্তিক পর্যায়ে ১ লাখ ৯ হাজার ২৪৪টি ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা হবে।