তীব্র শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উত্তর জনপদের মানুষ। হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ছে। ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে এলাকা। হাসপাতালে বেড়েছে রোগী ভর্তির সংখ্যা। আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর :
দিনাজপুর : হাড় কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন থমকে গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলায়ও সড়কে যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষ পড়েছে দুর্ভোগে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে নিম্নআয়ের মানুষ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দিনাজপুরে বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, হিমালয়ের পাদদেশের অবস্থিত এই অঞ্চলে উত্তরের হিমেল বায়ু আবারও সক্রিয় হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এছাড়াও ২৯ অথবা ৩০ জানুয়ারির দিকে আরো একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এ অঞ্চল দিয়ে।
সৈয়দপুর (নীলফামারী) : সৈয়দপুরে বয়ে চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে দূরপাল্লার যানবাহন। শীত থেকে বাঁচতে শহরের ফুটপাত ও রেললাইনের পাশে বসা পুরাতন কাপড়ের দোকানে ভিড় বেড়েছে। স্থানীয় হাসপাতালে নিউমোনিয়া, হাঁপানি, রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) : উপজেলায় ঠান্ডার কারণে বাড়ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। অন্যদিকে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় কর্মজীবী মানুষ পড়েছে দুর্ভোগে। উপজেলার বামনের চর গ্রামের সাইদুর রহমান বলেন, দুই দিন থেকে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। কাজও বন্ধ রয়েছে। রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. নাজমুল হুদা বলেন, শীত ও অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে শিশুরা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত দুই দিনে ১৫ শিশু ভর্তি হয়েছে। তবে কোনো আশঙ্কা নেই।
কাহারোল (দিনাজপুর) : মৌসুমের শুরুতেই ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে গভীর-অগভীর নলকূপ এবং বিভিন্ন উপায়ে উপজেলার কৃষকরা সেচের ব্যবস্থা করে ইরি-বোরো চাষ শুরু করে। উপজেলার কাজিটানা গ্রামের কৃষক আরমান জানান, ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে সময়মতো চারা রোপণ করতে না পারলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না।
পূর্বধলায় শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন স্থবির
পূর্বধলা (নেত্রকোনা) সংবাদদাতা জানান, উপজেলায় প্রচণ্ড শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দেখা দিয়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ-বালাই। হাড় কাঁপানো শীতে মানুষের পাশাপাশি কাবু হয়ে পড়েছে গবাদি পশু-পাখিও। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল করছে নিয়ন্ত্রিত গতিতে। পুরোনো কাপড়, কাগজ ও টায়ার জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিতে দেখা গেছে।