গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুত ১৭৬ জন শ্রমিককে পাওনা বাবদ ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস।
সোমবার (২৩ মে) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক কোম্পানি বেঞ্চে এ তথ্য জানান শ্রমিকদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী।
একই সঙ্গে ৪০০ কোটি টাকা পাওয়ায় গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে করা মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শ্রমিকেরা।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে এ আবেদন দায়ের করা হয়।
আবেদনকারী সংগঠনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষ চলে আসছিল। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়। এরপর সে নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ২৮ জন কর্মী। এ ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূসকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল দিয়েছিলেন শ্রমিকদের পুনর্বহালের নির্দেশ। বিভিন্ন সময় মোট ১৭৬ জন শ্রমিক এ রিটে পক্ষভুক্ত হন।
এ ছাড়া গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। বিবাদীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছিলেন আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও শাহজাহান।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা তাদের দেওয়া হয়নি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে এ মামলা করা হয়।