টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রেকর্ড জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

0
52
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রেকর্ড জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রেকর্ড জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মাসকাটের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে রেকর্ড জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনকে ৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে পরের পর্বে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। 

আজ (বৃহস্পতিবার) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউ গিনির (পিএনজি) বিপক্ষে আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৮১ রানের বড় পুঁজি পায় বাংলাদেশ। সমীকরণ অনুযায়ী ৩ রানের ব্যবধানে জিতলেই নিশ্চিত হতো সুপার টুয়েলভ। তবে দুই দলের ব্যবধান মাঠেই স্পষ্ট করলেন টাইগার ক্রিকেটাররা। পিএনজিকে ৯৭ রানে অলআউট করে ৮৪ রানের রেকর্ড ব্যবধানে জয় তুলে নেয় টাইগাররা।

৩ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ‘বি’ থেকে সবার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের টিকিট নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভের লড়াইয়ে অবশ্য কোন গ্রুপে পড়বে বাংলাদেশ সেটি চূড়ান্ত হয়নি এখনো। দিনের অপর ম্যাচে রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ওমান ও স্কটল্যান্ড। এ ম্যাচের ফলের উপর নির্ভর করবে ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ দলের সঙ্গী হচ্ছে কে, আর সুপার টুয়েলভের কোন গ্রুপে যাচ্ছে টাইগাররা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা রাঙাতে পারেননি নাঈম শেখ। দ্বিতীয় বলে সেসে বাউর হাতে ক্যাচ তুলে শূণ্য রান নিয়েই সাঝঘরে ফেরেন তিনি। ওয়ান রাউন্ডে নেমে দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। তাকে সঙ্গ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু মাঠে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারলেন না তিনি। ব্যক্তিগত ২৯ রান করে আসাদ ভালার বলে সেসে বাউর হাতে ক্যাচ তুলে উইকেট হারান এই ওপেনার।

চতুর্থ উইকেটে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না মুশফিক। সিমন আতাইয়ের বলে হিরি হিরির হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৫ রান করে বিদায় নেন তিনি। লিটন-মুশফিক ব্যর্থ হলেও ব্যাট হাতে লড়ে যাচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু অর্ধশতক পূর্ণ করার ৪ রান আগেই আসাদ ভালার শিকার হন তিনি। ৩ ছয়ে ৩৭ বল খরচায় ৪৬ রান করে বিদায় নেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

সাকিবের বিদায়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৩ চার ও ৩ ছয়ে মাত্র ২৭ বলে অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। কিন্তু ১৮তম ওভারে ছক্কা মারতে গিয়ে রাবুর বলে সোপারের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন টাইগার অধিনায়ক। একই ওভারের শেষ বলে আতাইয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ডাক মারেন সোহান। পরের ওভারে ব্যক্তিগত ২১ রান করে মোরেয়ার শিকার হন আফিফ হোসাইন।

টি-টোয়েন্টি ম্যাচের শেষদিকে ব্যাট করতে নেমে ক্যামিও ইনিংসে বাংলাদেশকে এ আসরের সর্বোচ্চ ১৮১ রান এনে দেন সাইফুদ্দিন। ৬ বলে ১৯ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ২ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন মাহেদি হাসান।

বাংলাদেশের দেওয়া ১৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ধীরগতির শুরু করে পাপুয়া নিউগিনি। তবে তৃতীয় ওভারে লেগা সিয়াকাকে এলবিডব্লিউ করে ব্রেকথ্রু আনেন সাইফউদ্দিন। ব্যক্তিগত ৫ রান করে সাঝঘরে ফিরেন পিএনজির এই ওপেনার। পরের ওভারে আসাদ ভালাকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ব্যক্তিগত ৬ রান করে বিদায় নেন পিএনজি অধিনায়ক।

পঞ্চম ওভারে বল করতে এসে জোড়া উইকেট নিয়ে পিএনজিকে কোণঠাসা করে দেন সাকিব আল হাসান। প্রথম বলে চার্লস আমিনিকে ফেরানোর পর চতুর্থ বলে সিমন আতাইকে ফেরান দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। দুর্দান্ত বোলিং করা সাকিব নিজের তৃতীয় ওভারে সেসে বাউকে শিকার করে তুলে নেন তৃতীয় উইকেট। ৭ রান করে সাঝঘরে ফেরেন পিএনজির এই ব্যাটার।

ধুঁকতে থাকা পিএনজি পাত্তাই পাচ্ছিল না বাংলাদেশের সঙ্গে। বল করতে এসে দশম ওভারে নরমান বানুয়ার উইকেট তুলে নেন মাহেদি। ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া পিএনজি এক এক করে উইকেট হারাতে থাকে। মাঠে থিতু হয়ে থাকা হিরি হিরিকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান সাকিব। ব্যক্তিগত ৮ রান করে সাঝঘরে ফেরেন পিএনজির এই ব্যাটার।

১৫তম সাইফউদ্দিনের দুর্দান্ত ইয়র্কারে উইকেট হারান চাদ সোপার। ব্যক্তিগত ১১ রান করে তার ফেরার পর দলের হাল ধরেন কিপলিন ডোরিগা। তাকে সঙ্গ দেয়া মোরেয়া রান আউট হন ব্যক্তিগত ৩ রান করে। এরপর ব্যাট করতে নেমে তাসকিন আহমেদের বলে উইকেট হারান রাবু। আর ৯৭ রানেই গুটিয়ে যায় পাপুয়া নিউগিনি। শেষ পর্যন্ত ২ চার ও ২ ছয়ে ৪৬ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন ডোরিগা।

বাংলাদেশের হয়ে মাত্র ৯ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন সাকিব। ২টি করে উইকেট শিকার করেন সাইফউদ্দিন ও তাসকিন।

বিশ্বকাপের মূলপর্বে পৌঁছাতে হলে এই ম্যাচে বড় জয়ের কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ একাদশ:

মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), শেখ মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।

পিএনজি একাদশ:

লেগা সিয়াকা, আসাদ ভালা (অধিনায়ক), চার্লস আমিনি, সেসে বাউ, সাইমন আতাই, হিরি হিরি, নরম্যান ভানুয়া, কিপলিন ডোরিগা (উইকেটরক্ষক), চাদ সোপার, ড্যামিয়েন রাভু, কাবুয়া মোরেয়া।