ছড়িয়ে পড়েছে চোখ ওঠা রোগ

0
63
ছড়িয়ে পড়েছে চোখ ওঠা রোগ
ছড়িয়ে পড়েছে চোখ ওঠা রোগ

দেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে চোখ ওঠা রোগ। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার হচ্ছে এই রোগটি। পরিবারের একজনের হলে পর্যায়ক্রমে অন্যদের হচ্ছে। চোখ ওঠা রোগটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় কনজাঙ্কটিভিজি বা কনজাঙ্কটিভা বলে। ভাইরাসের কারণে রোগটি হয়ে থাকে।

রোগটি হলে কারো কারো কোনো চিকিৎসা ছাড়া এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। আবার কারো চিকিৎসা লাগে। সাধারণত বছরের এ সময়টাতেই চোখ ওঠা রোগ হয়ে থাকে। এই রোগ হলে চোখ গোলাপি অথবা লাল হয়ে যায়।

লক্ষণ:

*  চোখ লাল হয়ে ব্যথা হয়
* চোখের পাতা ফুলে যায়
* চোখে চুলকানি হতে পারে
* চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে
* সাময়িক সময়ের জন্য চোখে কম দেখতে পারেন
* চোখে ময়লা জমে থাকতে পারে

প্রতিকার:

* চোখ কচলানো যাবে না
* স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে
* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে
* চশমা পরতে হবে এমন নয়, তবে এ সময় পরলে ভালো। রোদের তাপ, ধুলাবালি থেকে চোখ রক্ষা পাবে 
* হাত হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে
* চোখ ভেজা থাকলে টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহারের পর টিস্যু পেপার অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে
* আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত পোশাক, তোয়ালে, বালিশ শেয়ার করা যাবে না
* দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে

রোগটি এতই ছোঁয়াচে যে, চোখ ওঠা রোগীর সংস্পর্শে না এসে কাছাকাছি থাকলে এ চোখ ওঠে যেতে পারে। কারণ ভাইরাসটি বাতাসে ছড়াতে পারে। রোগীর ব্যবহার্য রুমাল, তোয়ালে, বালিশ, টিসু অন্যরা ব্যবহার করলে তারা আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, কাছাকাছি না থাকলেও অন্যদের হয় আবার খুবই কাছাকাছি থাকার পরও চোখ ওঠে না। ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কারো দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠলে (অ্যান্টিবডি হয়ে গেলে) কাছাকাছি থাকলেও হয় না। ভাইরাসের সংক্রমণে প্রদাহ হয়, চোখের মধ্যে থাকা খুবই সুক্ষ্ম রক্তনালী ফুলে যেতে পারে। রক্তনালীগুলো ফুলে যায় বলেই চোখের রঙ লাল হয়।

বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, বর্তমানে যে ভাইরাসে চোখ ওঠা রোগটি হচ্ছে এই ভাইরাসটি চোখের কালো (কনজাঙ্কটিভা) অংশটিকে বেশি আক্রান্ত করে। তবে মাঝে মধ্যে চোখের কর্নিয়াকেও আক্রান্ত করতে পারে। এক সপ্তাহের মধ্যে ভালো না হলে চোখের বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত। তিনি মেশিনে চোখ পরীক্ষা করে কিছু ওষুধ দেবেন। বরং আমি বলব, মেশিনে পরীক্ষা করে চোখের চিকিৎসা করালেই যথাযথ চিকিৎসা হয়। চোখের ডাক্তার রোগীকে অ্যান্টি হিস্টাসিন দিতে পারেন। দিতে পারেন চোখের অ্যান্টিবায়োটিক। একই সাথে তিনি লো স্টেরয়েডও দিতে পারে।

অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস আরো বলেন, চোখ ওঠার রোগীর চোখের পানি পাতলা টিস্যু দিয়ে মুছে নিরাপদ স্থানে ফেলতে হবে। চোখের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ভাইরাস থাকে। এই পানিটি খুব সাবধানে মুছে টিস্যুই হোক বা অন্য কিছু হোক যত্রতত্র ফেলা যাবে না। অন্যরা এই পানির সংস্পর্শে এলে তাদেরও চোখ ওঠা রোগটি হয়ে যেতে পারে। প্রথমে একটি চোখে সমস্যা সৃষ্টি করলেও পরে আরেকটি চোখে সমস্যা হতে পারে। সাবধানে থাকলে, গরম সেঁক দেয়া হলে চোখে আরাম বোধ করবেন রোগী। এই রোগের সময় বাইরে না যাওয়াই ভালো। বাইরে গেলে চোখে কালো চশমা পরে নিলে রোগী আরাম বোধ করবেন। কিন্তু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।