ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ৩৫ জনের প্রাণহানি

0
42
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ৩৫ জনের প্রাণহানি
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ৩৫ জনের প্রাণহানি

সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঘরের নিচে চাপা পড়ে, গাছের চাপায়, পানিতে ডুবে, নৌযান ডুবে সারাদেশে মোট ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন নারী, ৪ শিশু। সবচেয়ে বেশি ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে গাছচাপায়।

ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি, চিংড়িঘের, পুকুর ও কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাঠে থাকা আমন ধান ও শীতকালীন আগাম সবজি নিয়ে শঙ্কায় আছেন চাষিরা। ঝড়ের প্রভাবে অনেক স্থানে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বিদ্যুতের লাইন, উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছেন।

তবে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে বড় কোনো বিপর্যয়ের খবর পাওয়া যায়নি। দেশের উপকূলীয় তিন বিমানবন্দরে বিমান চলাচল আবার শুরু হয়েছে। তিনটি মহাসড়কেও সোমবার রাতে কয়েক ঘণ্টা থেমে থাকার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এদিকে উপকূলের কিছু স্থানে বেড়িবাঁধে ক্ষয়ক্ষতির কিছু খবর পাওয়া গেছে।

সিত্রাং নিয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের ৪১৯টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ইউনিয়নে আনুমানিক ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৬ হাজার হেক্টর ফসলের জমি নষ্ট হয়েছে এবং ১ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকৃত ক্ষতির প্রতিবেদন পেতে ৭ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগবে।

এদিকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ঘরবাড়ি ও ফসলের। ভোলার সাগরমোহনার ইউনিয়নগুলোতে সোমবার রাতের জোয়ারে প্রায় ১০ ফুট পানি উঠেছে। অনেক এলাকায় বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। ঝড়ে প্রায় ৩ হাজার ৮৯০টি ঘর আংশিক ও ১ হাজার ৪৩৩টি ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বরগুনায় ৯৭২টি ঘর আশিংক ও ৬৮টি বসতঘর সম্পূর্ণ বিধস্ত হয়েছে। পিরোজপুর মৎস্য বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৪১৯ জন মৎস্যচাষির ঘের ও পুকুরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঝোড়ো হাওয়ায় শরীয়তপুরে ৬ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমির ফসল নুইয়ে পড়েছে। শীতকালীন আগাম জাতের সবজি, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, পান ও রবিশস্যের ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন গ্রামে ৯৩০টি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

নোয়াখালীতে পাঁচটি উপজেলায় কমপক্ষে ১ হাজার ৩০৩টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হাতিয়ার ৪৪০টি বাড়িঘর। খুলনায় ১ হাজার ৬০০ ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর জলোচ্ছ্বাস না হওয়ায় ও কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষতির হাত থেকে বেঁচেছে মাছের ঘের ও জমির ফসল।