
করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর পর আগামীকাল রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্কুল, কলেজ এবং সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামীকাল স্কুল খোলা নিয়ে রীতিমত উৎসবের আমেজ চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার স্কুলগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ক্লাসরুম সাজানো হয়েছে বেলুন ও রঙিন কাগজ দিয়ে। কিছু কিছু স্কুলে রাখা হয়েছে আইসোলেশন রুম সুবিধাসহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানান পদক্ষেপ।
বছরের শুরুতে এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা আয়োজন করার কথা থাকলেও এখনও তা সম্ভব হয়নি। এছাড়া অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষা আয়োজন নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে আগামীকাল থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে আলাদাভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনাসহ বেশ কিছু সতর্কতা ও সচেতনতামূলক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
মাউশির ১১ নির্দেশনা
১. ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে।
২. প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একদিন প্রতিষ্ঠানে আসবে।
৩. সপ্তাহে প্রতিদিন নির্দিষ্ট শ্রেণিতে ২টি করে ক্লাস ধরে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রুটিন তৈরি করবে।
৪. রুটিনের সঙ্গে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহারিক ক্লাস নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫. যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর সংযুক্ত রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠান ওই সব স্তরের জন্য নির্ধারিত ক্লাসগুলো সমন্বয় করে রুটিন করবে।
৬. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চলমান ডিগ্রি, সম্মান ও মাস্টার্স পরীক্ষার সঙ্গে সমন্বয় সাপেক্ষে ২০২১ ও ২০২২ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য রুটিন প্রণয়ন করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
৭. রুটিন প্রণয়নের ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ, প্রস্থান ও অবস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের মতো ঘটনা না ঘটে।
৮. রুটিন এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে যেন ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে এবং প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়।
৯. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপাতত এসেম্বলি বন্ধ থাকবে।
১০. প্রতিদিন নির্ধারিত চেকলিস্ট অনুযায়ী তথ্য পাঠাতে হবে।
১১. পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে উল্লিখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হবে।
আরও পরুনঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৬ দফা নির্দেশনা
শিক্ষকরা বলছেন, প্রতিদিন যেহেতু সকল শ্রেণির ক্লাস নেই তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়ালেখা কঠিন হবে না। শিক্ষাবিদ ও জনস্বাস্থ্য গবেষকরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চালাতে হবে শিক্ষা কার্যক্রম।