খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। অপর দিকে ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের নতুন একটি কমিটি গঠন করেছে। গত শুক্রবার রাতে এই কমিটি গঠন করা হয় বলে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন জানান।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে কুয়েটের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার রিপোর্টার কাম ক্যামেরাম্যান মো. মনিরুল ইসলাম সাগরের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রফেসর ড. মো: সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি ২ ও ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৭৬তম (জরুরি) সভায় উত্থাপন করা হলে সিসিটিভির ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যাদি পর্যালোচনা করে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা প্রতীয়মান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির আলোকে অসদাচরণের আওতায় সিন্ডিকেট ৯ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সিএসই বিভাগের ছাত্র সাদমান নাহিয়ান সেজান (রোল-১৩০৭০২৪), সিই বিভাগের মো: তাহামিদুল হক ইশরাক (রোল-১৫০১০৯০), এলই বিভাগের মো: সাদমান সাকিব (রোল-১৫১৯০৩৩), এলই বিভাগের আ স ম রাগিব আহসান মুন্না (রোল-১৫১৯০৪৮), সিই বিভাগের মাহমুদুল হাসান (রোল-১৬০১০২৯), এমই বিভাগের মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান (রোল-১৬০৫০৩৯), সিএসই বিভাগের মো: রিয়াজ খান নিলয় (রোল-১৬০৭০৭৫), এমই বিভাগের ফয়সাল আহমেদ রিফাত (রোল-১৬০৫০৯৩) এবং এমএসই বিভাগের মো: নাইমুর রহমান অন্তু (রোল-১৬২৭০১০)।
অপর দিকে গত মঙ্গলবার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা তদন্তে ওই দিন ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ওই তদন্ত কমিটির ২ সদস্য তদন্তে অপারগতা প্রকাশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আলহাজ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। সদস্য করা হয়েছে কুয়েটের প্রফেসর ড. খন্দকার মাহবুব, খুলনা জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধি ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের একজন প্রতিনিধিকে। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে বের হচ্ছিলেন অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন। রাস্তায় কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সিজানের নেতৃত্বে কয়েক শিক্ষার্থী তার পথরোধ করে বিভাগের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে বাগবিতণ্ডা হয়।
এদিকে শুক্রবার কুয়েট বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে গেছেন। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।