নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুরে তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে সিনহা ওপেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ করে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাঁচপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ রুপ নেয়। পুলিশের সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ১ পুলিশ সদস্যসহ ৫ পুলিশ, শ্রমিক ও পথচারীসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাঁচপুর শিল্পনগরী এলাকায় অবস্থিত পোশাক রফতানীকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান ওপেক্স গ্রুপের সিনহা গার্মেন্টসে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।
বুধবার সকালে শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে কারখানা এলাকায় অবস্থান নেয়। দিনভর বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের ব্যাপারে মালিকপক্ষের কোনো সাড়া না পাওয়ায় বিকেলে শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট সড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়কে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে।
এ সময় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: হাফিজুর রহমান, শিল্পাঞ্চল পুলিশের কনেস্টেবল সজিব (ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ) ৫ পুলিশ সদস্য, শ্রমিক পথচারীসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়।
আহত কনস্টেবল সজিবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
সোনারগাও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে মালিক ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের ব্যাপারে সমঝোতা করার চেষ্টা করা হলেও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।
কয়েকজন শ্রমিক নেতা এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও ছুঁড়ে। এ ঘটনার পর পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য প্রায় ৬০ রাউন্ড গুলি ও প্রায় ৩০ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এ সময় শ্রমিক নেতাদের গুলিতে শিল্পাঞ্চল পুলিশের কনস্টেবল সজিব (ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ) মারাত্মকভাবে আহত হয়। এছাড়াও তিনিসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।