
করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার প্রটোকল আপডেট করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে সেটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে করোনার ব্যবস্থাপনার আপডেট প্রটোকল সরকারি-বেসরকারি সব চিকিৎসকের কাছে পৌঁছে যাবে। গতকাল শনিবার মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের অনলাইন মিটিংয়ে এই আপডেট প্রটোকলের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বেলা ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মিটিংয়ে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গাইডলাইন অনুসরণ করে করোনা চিকিৎসার প্রটোকল আপডেট করা হয়েছে। এদিকে ভারতের করোনা ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলেন, দেশের মানুষের স্বার্থে আপাতত সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া এবং ভারত থেকে আসা মানুষের দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখা নিশ্চিত করতে হবে।
করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার আগের প্রটোকল অনুযায়ী করোনা রোগীকে দ্রুত সুস্থ করতে মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগ করা হতো। এ কারণে রোগী সুস্থ হলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগতেন, দুর্বল হয়ে যেতেন। আইসিইইউ রোগীদের ক্ষেত্রেও নানা জটিলতা দেখা দিত। করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার প্রটোকল আপডেট করতে রবিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে সোসাইটি অব মেডিসিনের কর্মকর্তাবৃন্দ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বৈঠক হয়।
মৃত্যু বৃদ্ধির কারণ, কোথায় কত জনের মৃত্যু হচ্ছে, করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা প্রটোকল আপডেট করা যায় কি না এসব বিষয়ে পরামর্শ দিতে সোসাইটি অব মেডিসিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ঐ সোসাইটির কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশের সেরা মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা গতকাল অনলাইনে মিটিং করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিদেশিদের গাইডলাইন অনুসরণ করে করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার আপডেট প্রটোকল করা হয়েছে। সেখানে কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না তার বিস্তারিত সব তথ্য আছে। অনলাইন মিটিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘করোনার ভারতের ভ্যারিয়েন্টে ঝুঁকি আছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। সব কাজের মূল কাজ একটাই, তা হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এর কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি করোনার টিকা নিতে হবে। টিকা নিলে মৃত্যু ঝুঁকি কম থাকে।’
আইসিডিডিআরবির ভাইরোলজি ল্যাবের প্রধান জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভারতের ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে তেমন একটা শঙ্কা নেই। এদেশে ইউকে ভ্যারিয়েন্টের পর আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছিল। সর্বশেষ গত কয়েক দিন আগে জি-সাইটে বাংলাদেশে ব্রাজিলিয়ান ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে বলে প্রকাশ করা হয়। তবে সরকার পরিস্থিতি ভালোভাবেই সামাল দিয়ে আসছে।’ বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দু-এক সপ্তাহ পর কমে আসবে বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে সারা দেশের কোথায় আইসিইউ ঘাটতি রয়েছে, দ্রুত আইসিইউ সম্প্রসারণ কীভাবে করা যায় এসব বিষয় নিয়ে গতকাল করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহর নেতৃত্বে একটি মিটিং হয়েছে। বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম উপস্থিত ছিলেন।