করোনার টিকাদান কার্যক্রম আজ রবিবার সারা দেশে একযোগে শুরু হচ্ছে। প্রথম দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ১ হাজার ৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে, যার মধ্যে ঢাকার ৫০টি কেন্দ্র রয়েছে। ঢাকায় ২০৪টি এবং ঢাকার বাইরে ২ হাজার ১৯৬টি স্বাস্থ্যকর্মী দল এসব কেন্দ্রে সরাসরি টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে। ধারাবাহিকভাবে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মোট ৭ হাজার ৩৪৬টি দল প্রস্তুত করা হয়েছে।
দেশব্যাপী বিস্তৃত টিকাদান কর্মসূচি শুরুর করার সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকাদান শুরু হচ্ছে রোববার থেকে। সারা দেশে মোট ১ হাজার ৫টি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে। টিকা দিতে কাজ করবে ২৪০০ টি দল। এগুলোর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫০টি হাসপাতাল, মাতৃসদন ও ক্লিনিকে সকাল আটটা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে।
গত ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন থেকে কুর্মিটোলা ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে টিকাদার কর্মসূচি চলছে। এসব হাসপাতালে অগ্রাধিকার পাওয়া ৫ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেয়ার কথা বলা হয়।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষ টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন। তাদের তালিকা তৈরি করে দেশের সব টিকাদান কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে টিকাও। এখন কবে কারা টিকা পাচ্ছেন, তা ঠিক করবে কেন্দ্রগুলো।
জানা যায়, সরকারের কাছে এখনো ৭০ লাখের মতো টিকা রয়েছে। এর থেকে চলতি মাসেই ৬০ লাখ টিকা দেয়ার কথা থাকলেও হঠাৎ করে তা ৩৫ লাখে নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে শুক্রবার টিকাদান পরিকল্পনায় সরকার কিছু পরিবর্তন আনার কথা জানান স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, দেশে আসা টিকার ৩৫ লাখ মানুষকে দিতে চাই আমরা। পরে আরো টিকা এলে মানুষকে দেয়া হবে।
এদিকে, টিকা নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধন আরো সহজ করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাতে অগ্রাধিকারের টিকা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত হওয়ার কথা বলা হয়।
ঢাকায় যেসব হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে-
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন
বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয় ক্লিনিক, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, সংক্রামক রোগ হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, লালকুঠি হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, জাতীয় বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল।
এ ছাড়া পাঁচটি নগর মাতৃসদন কেন্দ্র মগবাজারের নয়াটোলা, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি, মিরপুর মাজার রোডের নেকি বাড়ির টেক, মিরপুরের বর্ধিত পল্লবী এলাকা ও উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের মাতৃসদন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচরে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সচিবালয় ক্লিনিক, সরকারি কর্মজীবী হাসপাতাল, আজিমপুর মা ও শিশু হাসপাতাল, মাতুয়াইল শিশু মাতৃসদন হাসপাতাল, পিলখানার বিজিবি হাসপাতাল, ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল।
এ ছাড়া পাঁচটি নগর মাতৃসদন কেন্দ্র ধলপুরে নগর মাতৃসদন, বংশালের কসাইটুলী নগর মাতৃসদন, হাজারীবাগে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন নগর মাতৃসদন, উত্তর মুগদা মাতৃসদন ও খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া মাতৃসদন কেন্দ্র।