এবার ঈদে করোনার প্রকোপ কম থাকায় ঢাকা থেকে ১ কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
রোববার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানায় সংগঠনটি। এসময় ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় সংগঠনটি।
তিনি বলেন, করোনা মুক্তির কারণে এবারের ঈদে ঢাকা থেকে ১ কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এছাড়াও এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরো প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে।
এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সকল পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা। কিন্তু যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহনে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদ যাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, এবারের ঈদ যাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই রাজধানীর সকল পথের ফুটপাত, রাস্তা হকারমুক্ত ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলো যাতায়াতে মানুষজনকে অসহনীয় যানজটে পড়তে হবে।
এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, কিছু অসাধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয়। ঈদ যাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি ও যানজটমুক্ত করা প্রয়োজন।
এছাড়া নৌ-পথে ভাড়া নৈরাজ্যের পাশাপাশি বিআইডাব্লিউটিএ ও জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সারাদেশে ৪০০ নৌ ও ফেরিঘাটে নিয়োজিত ইজারাদারেরা ঈদে যাত্রী পারাপারে বাড়তি টোল আদায়ের নৈরাজ্য চালায়।
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়াসহ বিভিন্ন ফেরিঘাটে যানবাহন চলাচল প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়লেও ফেরির সংখ্যা কমেছে। তাই এসব ফেরিঘাটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো ও বিদ্যমান ফেরিগুলো যথাযথ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা উচিত।
এবারে কালবৈশাখীর শঙ্কা থাকায় নৌপথ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই আনফিট নৌযান বন্ধসহ ফিটনেসধারী নৌযানে যাতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করতে না পারে তার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্র ও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির ডিরেক্টর অধ্যাপক হাদিউদ্দাজামান বলেন, আমাদের যে সক্ষমতা আছে, তাতে প্রতিদিন ১৪ লাখ মানুষ সুষ্ঠুভাবে ঢাকা ছাড়তে পারবে।
কিন্তু ঈদে যাত্রীর চাপ থাকবে প্রতিদিন ৩০ লাখ। অতিরিক্ত যে ১৬ লাখ যাত্রী, তারা ওভারলোড হয়ে যাত্রা করবেন। তাই ঈদের আগে পরের ৮ দিনের ছুটি কাজে লাগিয়ে সমস্ত পরিবার একসঙ্গে না গিয়ে বরং একে একে ঢাকা ছেড়ে এই চাপ কমানো যেতে পারে।