ভারতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বন্যা পরিস্থিতি। দেশটির আসাম-মেঘালয় রাজ্যে গত দুই দিনে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আসামের ২৮টি জেলার অন্তত ১৯ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যটির কর্মকর্তারা জানান, ব্রহ্মপুত্র ও গৌরাঙ্গ নদীর পানি অনেক এলাকায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা কবলিত জেলাগুলোর প্রশাসন নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সতর্কতা জারি করেছে। একই সঙ্গে তারা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বুধবার আসাম ও মেঘালয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৭২ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ এই দুটি রাজ্যে জারি করা রেড অ্যালার্টের সময়সীমা রোববার পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
বুধবার মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৮১১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের দুই দিনের মধ্যেই শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা ১৯৯৫ সালের জুন মাসের পর সর্বোচ্চ এবং ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বহু এলাকায় ব্রহ্মপুত্র ও গৌরঙ্গ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, গত দুই দিনে আসামে বন্যাজনিত বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মেঘালয় রাজ্যের প্রশাসন গত দুই দিনে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে।
রাজ্যটির রাজধানী গুয়াহাটিতে জলাবদ্ধতার কারণে টানা তিন ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। নগরীর কয়েকটি এলাকায় বেশি কয়েকটি ভূমিধসের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে।
টানা বৃষ্টিপাতে ডিহিং নদীর পানির উচ্চতা বাড়ার পর বুধবার বাকসা জেলার সুবনখাতা এলাকার একটি সেতু আংশিক ধসে পড়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিম্ন আসামের রানগিয়া বিভাগের নালবাড়ি ও ঘোগরাপারের মধ্যবর্তী লাইন ডুবে যাওয়ায় অন্তত ছয়টি ট্রেন যাত্রা বাতিল ও চারটির আংশিক বাতিল করতে হয়েছে।
মেঘালয় সরকার রাজ্যের চারটি অঞ্চল দেখার জন্য চারটি কমিটি গঠন করেছে। প্রতিটি কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্য সরকারের একজন করে মন্ত্রী। মহাসড়কের কিছু অংশ ধসে পড়ার পরে ন্যশনাল হাইওয়ে ৬-এ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই সড়কটি ত্রিপুরা, দক্ষিণ আসাম, মিজোরাম এবং মেঘালয়ের কিছু অংশের লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত।